null
দেশে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা এখন ৪৬.৪ শতাংশ বেশি। এ সক্ষমতা অর্থনীতির জন্য মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, উৎপাদন না করলেও বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে ঠিকই ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। সরকারের তহবিল থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা চলে যাচ্ছে এ চার্জের নামে।
এদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়লেও দেশে লোডশেডিং হচ্ছে। গরমে গড়ে ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে ডিজেল দিয়ে, সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস এনে কারখানা চালাতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়ে গেছে। বন্ধও হচ্ছে অনেক কারখানা। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ না থাকায় বিনিয়োগ আসছে না। দেশে প্রায় ২৫ শতাংশ ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ও শিল্পের কাঁচামাল ২২ শতাংশ আমদানি কমেছে।
রোববার রাজধানী ঢাকার মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে এক আলোচনার আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সেখানেই বিষয়টি তুলে ধরেন বক্তারা।
আলোচনা অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা এখন ৩০ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট। কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। উৎপাদন না হলেও বাড়তি ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুতের জন্য খরচ তথা ক্যাপাসিটি চার্জ বহন করছে সরকার।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বলা হয়, বিদ্যুতের উৎপাদনের এ সক্ষমতা ২০৩০ সালেও প্রয়োজন হবে না। কারণ সে সময় চাহিদা দাঁড়াতে পারে ১৯ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। ২৫ শতাংশ রিজার্ভ ধরলেও ২৩ হাজার ২৫২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা হলেই হবে তখন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-গ্যাসের কথা বলে দাম বাড়ানো হলেও লোডশেডিং কমেনি। ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে কারখানায় খরচ বেড়ে গেছে। অনেক কারখানা বন্ধ হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না হলে কর্মসংস্থান বাড়ানো যাবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমলেও ডলারের দাম বেশি হওয়ায় এ দেশে সেই সুবিধা মিলছে না। আর এর প্রভাব বিদ্যুৎ খাতেও পড়ছে। তাই সবার আগে একটি আধুনিক জ্বালানি নীতিমালা প্রয়োজন। বিদ্যুৎ খাতের বিশেষ বিধান বাতিল করতে হবে। টেন্ডার ছাড়াই প্রকল্প নেওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এখনও ১২ থেকে ১৩ টাকায় সৌর বিদ্যুতের চুক্তি হচ্ছে। অথচ দর প্রক্রিয়ায় গেলে ৮ থেকে ৯ টাকায় করা সম্ভব এটা।
বক্তব্য দেন- সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, হামিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ,পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, অধ্যাপক ম. তামিম, ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে