দলের দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে গুরুতর আহত রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল (৫০) ঘটনার চার দিনের মাথায় মারা গেছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয় বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে।
হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘মাথায় গুরুতর জখম ছিল বাবুলের। এ জন্য প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। হাসপাতালে আনার পর অস্ত্রোপচার করেই তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। সেখানে জখমের স্থানে ইনফেকশন দেখা দেয়।’
গত ২২ জুন বাঘা উপজেলা সদরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের নেতা–কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। তাদের মধ্যে বাবুল ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জমির দলিল রেজিস্ট্রির করতে বাড়তি টাকা আদায় করছে বাঘা উপজেলা দলিল লেখক সমিতি। উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ সমর্থন দিয়ে থাকে এ সমিতিকে। আর অন্য একটি অংশ দলিল লেখক সমিতির এ অরাজকতার বিপক্ষে। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত শনিবার (২২ জুন) সংঘর্ষে জড়ায় দুপক্ষ।
গত ১৯ জুন দলিল লেখক সমিতির নতুন কমিটির সভাপতি উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শাহিনুর রহমান পিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক পাকুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শামিউল আলম নয়ন দায়িত্ব নিতে যান। সেদিন সাধারণ দলিল লেখকেরাই অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে পরদিন ২০ জুন দলিল লেখকদের একাংশ মানববন্ধন করে।
এদিকে ২২ জুন দলিল লেখক সমিতির দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে বাঘা উপজেলার সচেতন নাগরিকের ব্যানারে উপজেলা চেয়ারম্যান লাভলু, পৌর মেয়র আক্কাস আলী ও ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুলের সমর্থকেরা বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে একই দিন বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধনের ডাক দেয় বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ। পাল্টাপাল্টি এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে আগের দিনই উত্তেজনা দেখা দেয়। ২২ জুন কর্মসূচির জন্য দুপক্ষের কর্মী-সমর্থকেরা উপজেলা চত্বরে জড়ো হলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিডি২৪অনলাইন/সৌমেন মন্ডল/সি/এমকে