দেখতে অবিকল বিমানের মতো। ডানা, লেজ- সবই আছে। ছুঁটে চলার সময় দুর থেকে দেখলে মনে হবে- আকাশের পরিবর্তে নদীর পানিতে ছুঁটে চলছে একটি বিমান। কিন্তু সেটা আদতে বিমান নয়, ইঞ্জিন চালিত নৌকা। বরিশালের বানারীপাড়ায় স্থানীয় বিভিন্ন নদী আর খালে কয়েক মাস ধরেই এমন একটি নৌকা ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সুবর্ণা এক্সপ্রেস-২ নামের এমন নৌকার কারিগর স্থানীয় ওয়ার্কশপ মিস্ত্রী গোলাম মোস্তফা। বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের মরিচবুনিয়ার গ্রামের বাসিন্দা তিনি। চৌমুহনী বাজারে রয়েছে তার ওয়ার্কশপ দোকান। সেই দোকানেই কাজের ফাঁকে অবসরে বসে না থেকে তৈরি করেছেন এ নৌযান।
১৮ জন যাত্রী নিয়ে ২৪ ঘণ্টাই নৌপথে চলাচলের সক্ষমতা রয়েছে বিমানটির। মোটর ইঞ্জিনচালিত বাহনটি এখন পর্যন্ত নিজেই পরিচালনা করছেন গোলাম মোস্তাফা।
মিস্ত্রী গোলাম মোস্তফার হিসাবে, দুই বছরের বেশি সময় লেগেছে নৌকাটি বানাতে। আর এতে খরচ হয়েছে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা। বিমানে চড়ার স্বপ্ন থেকেই এমন আকৃতির নৌকা তৈরি করার চিন্তা মাথায় আসে তার। কাজের ফুসরতে গ্রামের শিশুদের অনেককে নিয়ে প্রায়ই এ ‘বিমান’ নিয়ে এখন ভ্রমণে বের হন তিনি।
ইঞ্জিনের
দক্ষ মেকানিক গোলাম মোস্তফা নিজের এলাকায় মোস্তফা ফিটার বা ফাইন্ডার নামে
পরিচিত। প্রকৌশল
শাস্ত্রে তার কোনো অ্যাকাডেমিক সনদ নেই। কিন্তু অভিজ্ঞতার ঝুলিটা বেশ বড়। প্রায় ২৭ বছর ধরে ওয়ার্কশপ কাজের সঙ্গে জড়িত তিনি। শুধু বিমান আকৃতির নৌকাই কেবল নয়, নিজের চিন্তা থেকে তিনি
তৈরি করেছেন কাঠের পরিবর্তে স্টিলের
লাঙল, লোহার বডির নৌকা ও ভাসমান ট্রাক্টর। এর সুফল পাচ্ছেন স্থানীয়রা।
গোলাম মোস্তফা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, গ্রামের খেটে-খাওয়া মানুষ খরচের দিক তাকালে প্লেনে উঠতে পারি না আমরা। সেই অক্ষমতা থেকে প্লেন তৈরির চিন্তা করি। শুরু থেকেই চিন্তা ছিল ‘বিমানটি’ আমাদের চলাচলের অন্যতম পথ নদীতে চলবে। নিজেও চড়তে পারলাম, লোকজনকেও চড়াতে পারব। সেই সঙ্গে যারা দেখবেন, তারাও বলবেন প্লেন আসছে- যোগ করেন গোলাম মোস্তাফা।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে