আশ্রয়ণের ঘর ছেড়ে যাওয়া ২০ পরিবারের নতুন ফন্দি !

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
০৯ জুলাই ২০২৪

আব্দুর রহমান ২০ বছর আগে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ছেড়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে আবাদি মাঠে তার জমি হয়েছে, বাড়িতে গড়েছেন পাকা ঘর, ছেলেদের প্রবাসেও পাঠিয়েছেন। যদিও অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার তথ্য চেপে রেখেই সরকারি ঘরটি বরাদ্দ পেয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই সেই ঘর অন্যের কাছে বিক্রি করে ফিরে আসেন নিজের জায়গায়।

শুধু আব্দুর রহমানই নয়, তার মতো ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পর সেটা অন্যের কাছে হস্তান্তর করে অন্যত্র বসতি গড়েছেন রোজিনা বেগম, মফিজ উদ্দিন, সাইদুর, তহিদুল, আরতি, ইব্রাহীম, খোরশেদ, মন্টু, মজিদ, কেরামত, খবির, কাজলীসহ অন্তত ২০ পরিবার।

এতোদিন সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই প্রকল্পের জড়াজীর্ন টিনসেড ঘর ভেঙে সেখানে আধাপাকা ঘর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ খবর যখন জানতে পেরেছে, তখন নতুন করে ‘ধান্ধা’ শুরু করেছে তারা। নিজেদের জায়গা থাকলেও সরকারের দেওয়া আধাপাকা ঘর দখল নিতে তাদের মধ্যে ৬জন আদালতে মামলা করেছে। এমন ঘটনা ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা চক-দিঘলী আশ্রয়ন প্রকল্পে।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, আব্দুর রহমান জমিতে ফসল সংগ্রহে গেছেন। তার স্ত্রীর দাবি- আর্থিক অবস্থা ভালো হলেও সরকারি বরাদ্দ দেওয়া ঘরে তারাই থাকবেন। ঘর বিক্রি করে আসা প্রসঙ্গে জানান,দলিল করে বিক্রি করা হয়নি।

২৪ বছর ধরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী আব্দুর রহমান (৮০) জানান, চক-দিঘলী ব্যারাকে সরকার প্রায় ১০০ পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাই করে দেয়। শুরুর দিকে সবাই বসবাস করলেও অল্প কিছুদিন পরে অন্তত ২০ পরিবারের কেউ কেউ ঘর বিক্রি কিংবা অসহায়দের বসবাসের সুযোগ দিয়ে নিজ ঠিকানায় ফিরেছেন। এখন পাকা ঘরের অধিকার নিয়ে তারা আবার আসছে চাচ্ছে।

চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জানান, স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নামে সরকারি ঘর বরাদ্দের সুযোগ নেই। বরাদ্দ নিয়ে যারা ব্যারাক হাউজে বসবাস করেনি অথবা যাদের স্বচ্ছলতা ফিরেছে, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে দীর্ঘ সময় ধরে যারা বসবাস করছেন এমন অস্বচ্ছল ব্যক্তিদের ঘর বরাদ্দ দেওয়ার দারি তার।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, পুর্বের জড়াজীর্ন ব্যারাক ভেঙে সরকার সেখানে ৯৮ টি ঘর নির্মাণ করছে। কারা সেখানকার বাসিন্দা হবেন, সেটা দেখবেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। যারা বরাদ্দ পেতে আদালতে গেছেন, আদালতের আদেশ পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা আক্তার জানান, বিধি অনুসারে প্রকৃত ভুমিহীন, গৃহহীনরা সরকারি ঘর বরাদ্দ পাবেন। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি তদন্ত সাপেক্ষে সমাধান করা হবে।

বিডি২৪অনলাইন/সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ/সি/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর