দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছে। এক সপ্তাহে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। বর্তমানে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা। দেড় মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে এ নিত্যপণ্যের দাম। পেঁয়াজের আগামী মৌসুম আসতে আরও প্রায় ছয়-সাত মাস বাকি। দরের লাগাম টেনে ধরতে সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ না নিলে নতুন মৌসুম শুরু আগে এবার পেঁয়াজের দাম আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমদানির কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন ভোক্তারা।
প্রাপ্ত তথ্য বলছে, এবার ভরা মৌসুমে পেঁয়াজের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ছিল। এ কারণে বেশিরভাগ কৃষক আগে-ভাগেই পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। বেশি দাম পাওয়ায় অনেকেই পরিপূর্ণ হওয়ার আগেই জমি থেকে তুলে পেঁয়াজ বাজারে এনেছেন। ফলে এখন কৃষকের কাছে পেঁয়াজের মজুত কম, মজুত এখন মজুতদারদের হাতে। বাজারে এখনো দেশি পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। তারপরও দিনে দিনে দাম বাড়ছে। ফলে সাধারণ ভোক্তারা বেকায়দায় পড়েছেন।
পরিসংখ্যান বলছে, কয়েক বছর ধরেই পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার ঘটনা ঘটছে। তবে অন্যান্য বছর নতুন মৌসুম শুরুর মাস দুয়েক আগে এমন ঘটনা ঘটলেও এ বছরের চিত্র ভিন্ন। ২০১৯ সালে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দিলে আড়াইশো টাকা দরে পেঁয়াজ কিনে খেয়েছে মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরিভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানি করতে দেখা গেছে।
এ বছর পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে দায়িত্বশীলদের এখনো দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানা যায়নি। দ্রুত বেড়ে চলা পণ্যটির দাম কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে, সে নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলাও হয়নি।
অন্যান্য বছর বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে দেখা গেছে। কিন্তু এবছর ভারতেই পেঁয়াজের দাম বেশি। সেখানে ফলন কম হয়েছে। তাছাড়া বছরের শুরু থেকেই উৎপাদন কম হওয়ার কারণ দেখিয়ে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত। পরে আমদানির অনুমতি দিলেও শুল্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারতে পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য (এমইপি) এখন টনপ্রতি ৫৫০ মার্কিন ডলার। এর সঙ্গে প্রায় ৪০ শতাংশ শুল্ক-কর রয়েছে। ফলে ভারত থেকে আমদানি করতে দেশির টাকায় কেজিপ্রতি পেঁয়াজে খরচ পড়ছে ৯০ টাকা। ফলে এখন খুব বেশি পেঁয়াজ আমদানি করছেন না দেশের আমদানিকারকরা। আমদানির সঙ্গে জড়িতদের ভাষ্য, ভারতের পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে সরকারকে আন্তরিক হয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে দিন যত যাবে, সংকট ততই বাড়বে।
বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে