আমারে জীবিত করার একটা ব্যবস্থা করেন, মৃত রাবেয়ার আকুতি!

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
১০ জুলাই ২০২৪

শেরপুরের নকলা উপজেলায় রাবেয়া বেগম (৮০) নামে এক বৃদ্ধাকেমৃতদেখিয়ে তার বিধবা ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এদিকে তার নাম পরিবর্তন করে মাহমুদা বেগম  নামে আরেকজনের নামের সেই ভাতা দেওয়া হচ্ছে। উপজেলার ৬নং পাঠাকাটা  ইউনিয়নের জাঙ্গীরাড় পাড় গ্রামে ঘটনা ঘটেছে।

কার্ড বাতিল করায় ৬ মাসের বেশি সময় ধরে ভাতা পাচ্ছেন না রাবেয়া বেগম। আঞ্চলিক ভাষায় তিনি বলেন, ‘আমি কেমনে  মরলাম? আমার চাইডডা  পুলা। ওরা কয়ডা টেহা কামাই কইরা ওরাই চলবার পাই না। আর আমি বুড়া মানুষ। আমার জামাই মইরা গেছে মেলাদিন আগে। আমিও কামাই করতে পারি না। সরকারি এই কয়ডা টেহা দিয়া কোনো মতে চলছিলাম। অহন টেহা না পাইয়া অ্যা হে চালায়।

তিনি বলেন, আমি কেমন মরলাম, সেটা তা এইডা মেম্বর চেয়ারম্যান  কবার পাবো। আমারে জেতা (জীবিত) কইর‌্যা একটা ব্যবস্থা কইর‌্যা দেইন আইন্নেরা। অসুখ-বিসুখ অইলে ওষুধ খাঅনের টেহা নাই।

জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে রাবেয়া বেগমের স্বামী ছুফেতুল্লাহ মারা যান।  এরপর থেকে তিনি সন্তান স্বজনদের সহযোগিতায় কোনোমতে জীবন-যাপন করছেন।  পরে তিনি বিধবা ভাতার আওতায় আসলে কিছুটা স্বস্তির মধ্যে খেয়ে পড়ে চলছিলেন। কিন্তু সেই ভাতা বন্ধ হওয়ায় আবার অভাব জেকে বসেছে তার ঘরে।

রাবেয়া বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ডিসেম্বর মাস থেকে তার মোবাইলে ভাতা সংক্রান্ত মেসেজ আসা বন্ধ হয়ে যায়। কেন এমনটি হয়েছে তা তিনি জানতে পারেননি। অবস্থায় তার বড় ছেলে ভাতার কার্ড নিয়ে স্থানীয়  ইউপি সদস্য মো. বাজু মিয়ার কাছে যান। ইউপি সদস্য বিষয়টি দেখবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু এখনো প্রতিকার মেলেনি। পরে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে খোজ নিয়ে জানতে পারেন, প্রায় ছয় মাস আগে রাবেয়া বেগমের ভাতার কার্ড বাতিল হয়েছে। কারণ হিসেবে জানানো হয়, তিনি মারা গেছেন। এরপর রাবেয়ার ছেলে তার মাকে সমাজসেবা অফিসে নিয়ে যান। পুনরায় ভাতা চালুর জন্য ধর্ণা দিলেও লাভ হয়নি।

 

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

বিডি২৪অনলাইন/রেজাউল হাসান/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর