দেশের মাধ্যমিক স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যার পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাত ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় মন্জুরি কমিশন থেকে এ সংক্রান্ত আলাদা বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এ ছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করেছে আন্তঃ শিক্ষাবোর্ড।
কোটা সংস্কারের আন্দোলন নিয়ে মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ-ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হওয়ার পরে এ ঘোষণা আসলো। দুই বিজ্ঞপ্তিতেই বন্ধ ঘোষণার কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত বা বন্ধ ঘোষণা হয়নি।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনটির একমাত্র প্লাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে রাস্তায় নেমে আসেন। মহাসড়ক, সড়ক অবরোধের পাশাপাশি বিক্ষোভ করেছেন তারা। এদিকে তাদের প্রতিহত করতে গেলে বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে তিন ছাত্রসহ ৬ জন নিহত হয়েছে, পাশাপাশি কয়েকশ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইন শৃঙখলা নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ গাজীপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর ও বগুড়ায় কয়েক প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ওদিকে, আশুরার কারণে প্রথমে কর্মসূচি না দিলেও পরে মধ্যরাতে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি অনুযায়ী, ‘পুলিশ এবং ছাত্রলীগের যৌথ হামলা ও গুলিবর্ষণে’ যারা নিহত হয়েছেন; বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব জেলায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা হবে দুপুর ২টায়, রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, মারামারি— এটা ছাত্রদের মধ্যে সব সময়ই, একমত হতে পারে না। মতবিরোধ থাকে, মতবিরোধ হলেই বাগবিতণ্ডা হয়। সে রকমই কিছু কিছু জায়গায় হচ্ছে। ঢিল ছোড়াছুড়ি দেখেছি। নিরাপত্তা বাহিনীকে বলেছি, যে পর্যন্ত প্রয়োজন না হয়, সে পর্যন্ত ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যে প্রবেশ করা যাবে না।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে