১০ জেলায় ভয়াবহ বন্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ অগাস্ট ২০২৪

দেশের ১০ জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ সিলেটে পরিস্থিতি বেশি অবনতি হয়েছে। এসব এলাকার বন্যাদুর্গত মানুষ তাদের উদ্ধারের আকুতি জানিয়েছে।  বন্যার্তদের ঠিক সময়ে উদ্ধার করতে না পারলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আকস্মিক বন্যায় ইতোমধ্যে ৩৭ লাখের বেশি মানুষ মানবিক সংকটে পড়েছে। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন জন।

এদিকে বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাঠে নামিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বন্যাকবলিতদের জন্য হাজার ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ১০ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবার জন্য ৪৯২টি মেডিকেল টিম চালু করা হয়েছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য বন্যা কবলিত জেলাগুলোর জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে নগদ কোটি ৩২ লাখ টাকা, ১৯ হাজার ৬৫০ মে.টন চাল ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করতেপ্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য সহযোগিতার জন্য ২৪ ঘণ্টা ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রাখা হয়েছে।

পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পযন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্রে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের নম্বরগুলো হলো০১৩১৮২৩৪৯৬২, ০১৭৬৫৪০৫৫৭৬, ০১৫৫৯৭২৮১৫৮, ০১৬৭৪৩৫৬২০৮ । এছাড়া বন্যার্তদের উদ্ধারে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তি উদ্যোগের সংগঠনগুলো তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে কাজ করছে।

উজানে পাহাড়ি ঢল, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমি লঘুচাপ ভারি বৃষ্টিপাতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা, ধলাই, মনু, খোয়াই, পূর্বাঞ্চলের গোমতী, মুহুরী দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী, হালদা নদীগুলোর পানি বেড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে ভুক্তভোগী স্থানীয়রাদের ভাষ্য, ভারত উজানে বাঁধ খুলে দেওয়ায় আকস্মিক এ ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের বন্যায়  এখন পযন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী জেলা। ৪০ বছরের মধ্যে এমন  বন্যা সেখানকার মানুষ দেখেনি বলে জানা গেছে।  জানা গেছে, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া লক্ষ্মীপুরের ৬৫ উপজেলা ৪৯৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। সরকারি হিসাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০ জেলায় লাখ ৮৬ হাজার ৪০টি পরিবারের ৩৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫৫২ জন পানিবন্দি হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার আবহাওয়া সংস্থাগুলোর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে। মৌলভীবাজার হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীগুলোর সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরে উন্নতি হতে পারে।  দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এতে ফেনী, কুমিল্লা চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা ইত্যাদি নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরে উন্নতি হতে পারে।

 

বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর