দেশের এগারো জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জনে, মারা গেছেন ২৩ জন। পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকার তিন হাজার ৮৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য ৬৪৫টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে এ তথ্য।
উজানের প্রবল ঢল এবং অতিভারি বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দেয় এক সপ্তাহ আগে। এর মধ্যে ভারত উজানে বাঁধের কপাট খুলে দিলে অল্প সময়ের মধ্যে বন্যা ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার জেলায় বিস্তৃত হয়। এর মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষীপুরে পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ রূপ নেয়।
এদিকে বন্যার মধ্যেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অধিপ্তরের হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরার অববাহিকাগুলোয় উল্লেখ করার মতো বৃষ্টি হয়নি। এ অবস্থায় ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকলেও লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে পানির চাপে ভেঙে গেছে মুছাপুর স্লুইসগেট। নড়াইলে ঘরবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সড়কের কোথাও কোথাও হাঁটুসমান পানি জমেছে, বাগেরহাট শহরের বেশির এলাকা প্লাবিত এখন। আর টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে খুলনায় জীবনযাত্রা। তবে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় মৌলভীবাজার ও খাগড়াছড়ির বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করেছে।
সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান জানান, ১১ জেলায় ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কুমিল্লায় ছয়জন, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে পাঁচজন করে; কক্সবাজারে তিনজন আর একজন করে ফেনী, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুরে মারা গেছে।
পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খোলা আশ্রয়কেন্দ্রে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৩ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। পাশাপাশি ২৮ হাজার ৯০৭টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান কামরুল হাসান। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে