গত ৮ মাসে ১২ হাজার ৪৯৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শুধু চলমান আগস্টের সংখ্যা মোট আক্রান্তের প্রায় অর্ধেক। এর মধ্যে অনেকটাই থমকে আছে মশা নিধনের কার্যক্রম। কিন্তু প্রায় প্রতিদিন ডেঙ্গুতে মৃত্যুর খবর আসছে। আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোব এ দুই মাস ডেঙ্গু পরিস্থিতির বড় ঝুঁকি রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর চোখ রাঙানি দেখতে হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব বলছে, চলছি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু ৭৯ জনের। এর মধ্যে আগস্টেই মারা গেছেন ২৩ জনের। গেল শুক্রবারেও ১৬৩ জনের শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।
মাসভিত্তিক হিসাবে, আগস্টের ৩০ দিনে ৬ হাজার ১৭৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। এ সময়ে মারা যায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৩ জন। একইভাবে জুলাইয়ে আক্রান্ত হয় ২ হাজার ৬৬৯ জন, মারা যায় ১২ জন। জুনে আক্রান্ত হন ৭৯৮ জন, মৃত্যু হয় ৮ জন। মে মাসে ৬৪৪ জন আক্রান্ত হয়, মৃত্যু হয় ১২ জনের। এছাড়া এপ্রিলে ৫০৪ জন আক্রান্তু ও দুজনের মৃত্যু, মার্চে ৩১১ জন আক্রান্ত ও পাঁচজনের মৃত্যু হয়। ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত হন ৩৩৯ জন, মৃত্যু হয় তিনজনের এবং জানুয়ারিতে এক হাজার ৫৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন, আর মৃত্যু হয় ১৪ জনের।
জনস্বাস্থ্যবিদের ভাষ্যমতে, সারা দেশে ডেঙ্গু এখন ছড়িয়ে পড়েছে। তাছাড়া সরকার পতনের পর দেশের সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার জনপ্রতিনিধিরা সরকার পতনের পর থেকে নেই। ডেঙ্গু মোকাবিলায় আন্তঃমন্ত্রণালয়েও গতি দেখা যাচ্ছে না। এর প্রভাব পড়ছে ডেঙ্গুবিরোধেী কার্যক্রমে। আগামী দুই সপ্তাহজুড়ে সারা দেশে নিয়মিত মশক নিধন, জনসচেতনতা ও চিকিৎসায় জোর না দিলে ডেঙ্গু যে কোনো সময় ভয়াবহ আকারে ছড়াতে পারে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনস্বাস্থবিদদের পরামর্শ হচ্ছে- বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধি পালিয়ে গেলেও অন্তর্র্বতীকালীন সরকার যেসব কর্মকর্তাকে দায়িত্ব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত করেছেন, তাদের এ বিষয়ে দ্রুতগতিতে কাজ করতে হবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের জনবহুল এলাকায় ডেঙ্গুর আবাসস্থল ধ্বংস করতে হবে। জমে থাকা পানি অপসারণের পাশাপাশি এসব বিষয়ে মনিটরিং বাড়াতে হবে। ঢাকার প্রত্যেক হাসপাতালে পর্যাপ্ত শনাক্তকরণ কীট ও আইভি ফ্লুয়েড সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোথাও প্রয়োজন হওয়া মাত্র যেন সরবরাহ করা যায়, সেজন্য কেন্দ্রীয়ভাবেও মজুদ বাড়াতে হবে। জনগণকেও সচেতন থাকতে হবে নিজেদের সুরক্ষার বিষয়ে, ছাদ কিংবা টবে জমে থাকা পানি অপসারণ করতে হবে। শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না, মশা বংশবিস্তার রোধে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে নিজ নিজ উদ্যোগ।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে