দেশের রফতানির অন্যতম খাত পোশাক শিল্পে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর প্রভাবে অর্ধশতাধিক কারখানা বন্ধ রয়েছে। অস্থিরতার জেরে প্রায় ১৫-২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। এ অস্থিরতার পেছনে আওয়ামী লীগের এক নেতা ও তার লোকজনের ইন্ধন থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে অন্যতম রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী। তারা এ নেতার ও তার লোকজনের কলকাঠি নাড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খল রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অন্য দিকে শ্রমিক অসন্তোষ শিগগিরই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছেন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নিজের কোনো পোশাক কারখানা না থাকলেও ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি সম্প্রতি বিজিএমই ‘র সভাপতির পদ দখল করেছেন। সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যা ও নির্যাতনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন তিনি। কচি ও তার নিযুক্ত বিজিএমইএ বোর্ড পর্দার আড়ালে থেকে ভূমিকা পালন করছে কি না বা চলমান শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে উসকানিদাতা হিসেবে কাজ করছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখতে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছে দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে যেমন ষড়যন্ত্র আছে, তেমনই তাদের কিছু ন্যায্য দাবিও আছে। শ্রমিক অসন্তোষের জেরে প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখছি। যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে শ্রমিক নেতারা, মালিকপক্ষ এবং সুপ্রিম কোর্টের দুজন আইনজীবী আছেন— যারা শ্রম আইন নিয়ে কাজ করেন। এ কমিটি শ্রম ভবনে বসবে। আমরা শ্রমিক ভাইদের আহ্বান জানাব, যে কোনো অভিযোগ, যেগুলো নিষ্পত্তিযোগ্য, তারা শ্রম আইনের মাধ্যমে সমাধান করতে পারবেন, সেগুলো সেখানে দেওয়ার জন্য বলেছি।
উপদেষ্টা আসিফ বলেন, তাদের কাছে অভিযোগগুলো দিলে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এগুলো যাতে সমাধান করতে পারি, সেজন্য মূলত বর্তমান যে কমিটি তার বাইরে গিয়ে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হবে। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণে আসবে। শ্রমিকদের যেসব সমস্যা আছে, সেগুলোর সমাধান দেওয়া সম্ভব হবে।
শ্রম উপদেষ্টা জানান, চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর উপদেষ্টারা বসছি। গতকালও বসেছিলাম, সেখানে ৬ জন উপদেষ্টা ছিলেন। বৈঠককালে একটি বড় কোম্পানি বেতন দিতে না পারায় সেখানে অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটেছে। সে সময় গভর্নরের সঙ্গে কথা বলে ৭৯ কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা করা হয়। এতে সেই বেল্টের ৪০ হাজার শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। সেজন্য শ্রমিক অসন্তোষ কম আছে আজ।
বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে