কয়েক দিনে আগে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বন্ধ ছিলে ঢাকার শিল্পাঞ্চল এলাকার  অনেক পোশাক কারখানা। পরে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকলেও সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেতন বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও কর্মবিরতি পালন করছেন আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানার পোশাকশ্রমিকরা। এতে ওই এলাকায়  ৫১টি কারখানার কাজ কাজ হয়ে যায়।

এদিকে শ্রমিক আন্দোলনে দিনভর উত্তাল থাকার পর গাজীপুরে ১৩টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা যায়, সোমবার দিনের শুরুতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়া-ডিইপিজেড-নবীনগর মহাসড়কের নরসিংহপুর এলাকায় জেনারেশন নেক্সট পোশাক কারখানার কয়েকশ শ্রমিক সড়ক অবরোধ করেন। তাদের সঙ্গে সেখানে যোগ দেন আশপাশের আরও কারখানার শ্রমিকেরা।

বিক্ষুব্ধ  শ্রমিকরা বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েকবার কয়েকবার বসলেও তারা আমাদের দাবিগুলো মেনে নেয়নি। পোশাক খাতে শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ২৫ হাজার টাকা করার জন্য কয়েকবার আন্দোলন করা হয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের দাবি মেনে না নিয়ে তালবাহানা করছে।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার শ্রমিক আন্দোলনের মুখে ১২টি পোশাক কারখানাসহ ১৩টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বাকিটি খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানা। খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলেও বাকিগুলো এক দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, শ্রমিকদের পাশাপাশি সমস্যা মালিকদেরও আছে। টঙ্গীতে  দেড়-দুই মাসের বেতনের জন্য আন্দোলন হয়েছে। শ্রমিকদের বেতন দেবে বলে মালিকপক্ষ বারবার আশ্বস্ত করলেও দিতে পারেনি।

জানা গেছে, তিন মাসের বকেয়া বেতনের পরিশোধের দাবিতে সোমবার সকাল ৯টার পর গাজীপুরের টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকায় সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে সেখানে সেনাবাহিনী আসলে শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়। এক পর্যায়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে এলে শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেয় মালিকপক্ষ। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পোশাক কারখানার শ্রমিক ও মালিকদের সমঝোতা হলে বিকাল ৪টার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশের যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

ওদিকে গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকায় গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস্ লিমিটেড নামের একটি গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা ১২ দফা দাবি আদায়ে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন। পরবর্তীতে তাদের চারটি দাবি মেনে নিলে শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে গেলে বেলা ১২টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

অপরদিকে, গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় একটি খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানায় বিক্ষোভ চলাকালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এর আগে শ্রমিকরা আধা ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করে। পরিস্থিতি বিবেচনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে।

বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে