২০১৭ সালে ভারতের বেসরকারি সংস্থা ‘আদানি পাওয়ার’ থেকে বিদ্যুৎ কেনা সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয় বাংলাদেশের। বিদ্যুৎ কেনার ক্ষেত্রে মূল্য-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ২৫ বছরের জন্য হওয়া এ চুক্তি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং আইনি জটিলতার কারণে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল হচ্ছে না। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে সম্ভব্য কারণ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, আদানির চুক্তিটি সরাসরি বাতিল করা কঠিন হবে। শক্তিশালী প্রমাণ ছাড়া আন্তর্জাতিক আদালতে এ সংক্রান্ত আইনি চ্যালেঞ্জে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা আছে। এ ক্ষেত্রে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব না হলে একমাত্র সম্ভাব্য বিকল্প হতে পারে শুল্ক কমাতে পারস্পরিক চুক্তি। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স
খবর অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় অবস্থিত আদানির ১৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তটি যখন হয়, তখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে এক ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে বাংলাদেশের প্রায় ১২ টাকা খরচ হয়। এ খবচ ভারতের অন্যান্য বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি। শুধু তাই নয়, দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় ৬৩ শতাংশ বেশি।
চুক্তিটি বাতিল না হওয়ার সম্ভব্য কারণ প্রসঙ্গে সূত্র বলছে, আদানি থেকে আসা বিদ্যুৎ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় এক-দশমাংশ পূরণ করে। এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের সময় হওয়া চুক্তিগুলো জাতির স্বার্থ রক্ষা করেছে কি-না, সেটা যাচাই করতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার- এ তথ্য জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, বর্তমানে বিষয়টি পর্যালোচনা করছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে আগেভাগে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
ওদিকে ‘আদানি পাওয়ার’ছাড়াও কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থা বাংলাদেশের কাছে বকেয়া টাকা পাবে। তাদের মোট বকেয়ার পরিমাণ ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। শেখ হাসিনার সরকারের আমলের শেষ দিক থেকেই চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে বাংলাদেশ, টান পড়েছে দেশের বৈদেশিক রিজার্ভেও। এ অবস্থায় দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে শেখ হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়া বকেয়া পরিশোধের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে খুব দ্রুতই অর্থের সংস্থান করতে হবে।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে