তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে জুলাই-আগস্ট থেকে শুরু করে বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। বাংলাদেশের এ অস্থিতিশীলতা পুঁজি করে একদিকে যেমন ফুলেফেঁপে উঠছে ভারতের তৈরি পোশাক (আরএমজি) শিল্প খাত। অন্যদিকে তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের জায়গা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের দখলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে গত সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের তৈরি পোশাকের রপ্তানির চিত্রে। এ মাসে দেশটির রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় একলাফে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক বিভিন্ন ব্র্যান্ড তাদের অর্ডার এখন বাংলাদেশের পরিবর্তে ভারতে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। ভারতের দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, যখন অন্যান্য পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলো তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে মন্দার সম্মুখীন হয়েছে, তখন ভারতের তৈরি পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। মুদ্রাস্ফীতি ও সরবরাহ চেইনে বিঘ্ন-সহ বৈশ্বিক বিভিন্ন সংকটের মধ্যেও ভারতের রপ্তানি বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার। ভারতের পোশাক রপ্তানি আয় প্রসঙ্গে দেশটির তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (এইপিসি) চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি বলেন, বিশ্বজুড়ে নানা সংকট আর অব্যাহত মুদ্রাস্ফীতির চাপ থাকলেও ভারতের তৈরি পোশাক রপ্তানির উচ্চ প্রবৃদ্ধির রেকর্ড হয়েছে। আর সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রধান প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলো তাদের তৈরি পোশাক রপ্তানির মন্থর গতির মুখোমুখি হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু সম্প্রতি সৃষ্ট সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় দেশে কিছু কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
কেয়াররেটিংয়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা বছরের এক বা দুই চতুর্থাংশের বেশি সময় ধরে চলতে থাকলে রপ্তানিকারকদের সময়মত ডেলিভারি নিশ্চিতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় ২শ’ থেকে আড়াইশ’ ২৫০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত মাসিক রপ্তানি আদেশ পেতে পারে ভারত ।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অপারেশনাল দক্ষতার কারণে বাংলাদেশের কাছ থেকে স্থায়ীভাবে এ খাতের বৈশ্বিক বাজারের শেয়ার দখলে নিতে পারে ভারত। বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে নিজেদের কর্মকাণ্ডকে আরও প্রসারিত করার নতুন সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে ভারতকে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগাতে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নেওয়ার ও ভারত টেক্স-২০২৫ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছেন এইপিসি চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে