পোশাক রপ্তানিতে হোঁচট

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ অক্টোবর ২০২৪

গত বছরের প্রথম আট মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ১৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন। চলতি বছরে প্রথম আট মাসে হয়েছে দশমিক ৫৩ শতাংশ কমে ১২ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে ইইউতে এবার পোশাক রপ্তানিতে হোঁচট খেয়েছে দেশ।

এদিকে ইউরোস্ট্যাটের তথ্য বলছে, গত জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে ইইউ ৫৯ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। গত বছরে একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ৬১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে আমদানি কমেছে   দশমিক ৬৩ শতাংশ।

প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ইইউতে পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে চীনের পর বাংলাদেশ দ্বিতীয়। গত জানুয়ারি-আগস্টে ইইউতে চীনা পোশাক রপ্তানি   দশমিক ১০ শতাংশ কমেছে। দেশটি পোশাক রপ্তানি করেছে ১৫ দশমিক ৬২ বিলিয়ন। গত বছর এ সময়ে তাদের রপ্তানি ছিল ১৬ দশমিক ২৯ বিলিয়ন। আর দশমিক ৫৩ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ।

ইইউতে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক ১০টি দেশের মধ্যে তিনটি হচ্ছে- পাকিস্তান, কম্বোডিয়া মরক্কো। এদের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হয়েছে। কম্বোডিয়ার রপ্তানি ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়ে দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িযেছে। পাকিস্তানের রপ্তানি দশমিক ৩২ শতাংশ বেড়ে দশমিক ৪৩ বিলিয়ন, আর  মরোক্কোর রপ্তানি দশমিক ০৯ শতাংশ বেড়ে বিলিয়ন হয়েছে। তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ তুরস্ক দশমিক ৫২ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করেছে। দেশটি রপ্তানি আয় করেছে দশমিক ৮৪ বিলিয়ন। গত গত বছর তাদের এ আয়ের পরিমাণ ছিল দশমিক ৩৯ বিলিয়ন।

ওদিকে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলসের (ওটেক্সা) তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক পোশাক আমদানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ শতাংশ। এর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি দশমিক ১৭ শতাংশ কমেছে। আয় হয়েছে দশমিক বিলিয়ন ডলার, গত বছর একই সময়ে আয়ের পরিমাণ ছিল দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে কমেছে পোশাক ইউনিটের দাম, এটা নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এর বাইরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বৈশ্বিক অস্থির পরিস্থিতি আরেকটি কারণ।

ক্রমাগত বিদ্যুৎ গ্যাস সঙ্কটের সমস্যার কারণে বাংলাদেশের কারখানাগুলো তাদের পুরো উৎপাদন ক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছে না। তাছাড়া সময়মতো কাঁচামাল পেতেও সমস্যায় পড়ছে। এতে উৎপাদনে অতিরিক্ত ২০ থেকে ২৫ দিন বিলম্ব হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন পোশাক ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া গত জুলাই আগস্টে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে উৎপাদন রপ্তানি চালানের গতি কমে যায়, জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের কারণে প্রথম প্রান্তিকে রপ্তানিও মন্থর ছিল বলে জানান তারা।

রপ্তানির ইতবাচক প্রবাহের জন্য এ খাতের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার নিশ্চিত করার কথা বলছেন রপ্তানিকারক অর্থনীতিবিদরা। সর্বোপরি রপ্তানিকে ইতিবাচক প্রবণতায় আনতে সরকারের তরফ থেকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার দাবি তাদের।

 

বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর