কয়েকদিন ধরে ঢাকায় রাজপথে আন্দোলন করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকেরা। সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ওদিকে সুদমুক্ত ঋণের প্রলোভন দিয়ে অহিংস গণঅভ্যুত্থানের ব্যানারে সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে যোগ দিতে ভোর থেকে ঢাকায় বাস-মাইক্রোবাসে সাধারণ মানুষদের নিয়ে আসা হয়। এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশকে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতার চেষ্টা করা হচ্ছে। বড় কোনো পরিকল্পনা না থাকলে একদিনে এতগুলো ঘটনা কাকতালীয় না। এখানে নানা পক্ষের পরিকল্পনা আছে বলেও মনে করছেন তিনি। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, এ রকম কাজ থেকে সবাইকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এ উপদেষ্টা।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পিত অস্থিরতার চেষ্টার বিষয়টি জানান নাহিদ ইসলাম। উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার সফলভাবে প্রশাসনিক কার্যক্রম করুক, এটা চাচ্ছে না অনেকেই। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার সংশ্লিষ্টরা ও তাদের দোসররা নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশে একটা বড় পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে তথ্য উপদেষ্টা জানান, প্রশাসনে স্থবিরতা কাটাতে পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছি। সে জিনিসগুলো নস্যাতের জন্য আমাদের এসব ঘটনায় ব্যস্ত রাখতে সারাদেশের এটেনশন এদিকে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে কি না, সেটা নিয়ে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। এর পেছনে দেশ ও দেশের বাইরে কারা জড়িত, সেটা খুঁজে বের করতে তদন্ত হচ্ছে।
প্রথম আলো অফিসের সামনে উত্তেজনা ও হামলা প্রসঙ্গে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, কোনো পত্রিকা অফিসে ভাঙচুর বা পত্রিকা বন্ধের জন্য চাপ প্রয়োগ করা সরকার সমর্থন করে না। পরবর্তীতে এমন ঘটনা ঘটলে সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার- কোনো গণমাধ্যম বা পত্রিকার বিরুদ্ধে জনগণের কোনো অংশের অভিযোগ বা ক্ষোভ থাকলে তারা সেটি প্রকাশ করতেই পারে। কিন্তু অবশ্যই শান্তিপূর্ণভাবে হতে হবে সেটা। ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষের অভিযোগ বা ক্ষোভ থাকলে আইনগতভাবে পদক্ষেপ নিতে পারে। অনাকাঙ্ক্ষিত বা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে জনগণ যেন অংশ না নেয়, সে আহ্বানও জানান উপদেষ্টা।
বর্তমানে আমরা সবাই একটা অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে আছি উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম জানান, এখন সবার ভেতরে বিপ্লবী চেতনা ও উত্তেজনা আছে। তবে সেটা ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতে হবে। সব দিক থেকে আমরা যেন সচেতন থাকি। এখানে রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা আছে, সবার কাছ থেকে দায়িত্বশীল জায়গাটা প্রত্যাশা করছি আমরা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে