বর্তমানে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানোয় গুরুত্ব দিচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলতি অর্থবছরের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের ধরা জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হারও সংশোধন করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সরকারের পাশ করা চলতি বাজেট সংশোধন করে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে। বাজেটে বড় ধরনের কাটছাট করার পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের থাকলেও গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারে বকেয়া ভর্তুকি বাবদ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকায় সেটি হচ্ছে না।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সরকারের আর্থিক, মুদ্রা ও বিনিময় হার-সংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিলের কমিটির বৈঠক হয়েছে। বৈঠক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। যদিও বৈঠক শেষে জানতে চাইলেও বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করতে রাজি হননি অর্থ উপদেষ্টা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৮ শতাংশ ধরে বাজেট দিয়েছিলে আওয়ামী লীগ সরকার। এ বাজেটে সার্বিক মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্ব বৈঠকে চলতি অর্থবছরের সার্বিক মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৯ শতাংশের নিচে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। গত অক্টোবর মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
বৈঠকে উপস্থিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বেশকিছু ক্ষতির পাশাপাশি বন্যাসহ নানান প্রকৃতিক দুর্যোগে ব্যয় বেড়েছে সরকারের। তাই সংশোধন করে চলতি বাজেট থেকে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেয় আওয়ামী লীগ সরকার।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংকখাত থেকে বেশি ঋণ নেওয়ার যে প্রবণতা ছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে সরকার। এর পরিবর্তে মনোযোগ দিচ্ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ঋণ নেওয়ার।
বৈঠকে সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ হয়েছে। কিন্ত কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব না আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রাজস্ব সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা কম হয়েছে। আদায় হয়েছে এক লাখ এক হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভ্যাট আদায়ের পাশাপাশি শুল্ক–কর ফাঁকি বন্ধ করে রাজস্ব বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় বৈঠকে। পাশাপাশি করবহির্ভূত রাজস্ব বাড়ানোর বিষয়টিও আলোচনা হয়।
বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে