ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে আগাম আলু তোলা শুরু করেছেন চাষীরা। এবার আলুর ফলন কম হচ্ছে। ফলন নিয়ে কিছুটা মন খারাপ হলেও ভালো দাম পাওয়ায় খুশি আলু চাষীরা। প্রতি বিঘায় প্রায় এক লাখ টাকা লাভ থাকছে তাদের।
উপজেলার ভানোর, দুওসুও এবং বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে চাষীদের মাঠ থেকে আলু তুলতে দেখা গেছে। সোমবার দুই বিঘা জমির আলু তুলেছেন দুওসুও ইউনিয়নের তেলীবন্দর গ্রামের ইন্দ্রলাল সাহা। তিনি জানান, দুই বিঘা জমিতে আলু মিলেছে ৮৬ মণ। ক্ষেতেই আলু বিক্রি করেছেন ৭১ টাকা কেজি দরে। দুই বিঘার জমির আলুর মূল্য ২ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ হবে তার।
ইন্দ্রলাল সাহার আলু কিনেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী সমশের আলী। তিনি জানান, গেল এক সপ্তাহ ধরে উচু জমির আলু তোলা শুরু করেছেন চাষীরা। গত এক সপ্তাহে সবোর্চ্চ ১১০ টাকা, সর্বনিম্ন ৭১ টাকা প্রতি কেজি আলু ক্ষেত থেকে কিনেছেন তিনি। প্রতিদিন ২-৩ ট্রাক আলু ঢাকার বাজারে পাঠাচ্ছেন তিনি।
আগাম আলু চাষ করেছেন এমন কয়েকজন চাষীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আশানুরুপ আলুর ফলন পাচ্ছে না কৃষকরা। প্রতি বিঘা জমিতে কমপক্ষে ৭০-১০০ মণ আলু ফলন হওয়ার কথা। তবে অনেকেই মনে করছেন, ভালো দামের আশায় পরিপূর্ণ বয়স না হতেই আলু তোলায় ওজন কম এবং ফলন কম হচ্ছে এবার।
চাড়োল ইউনিয়নের সাবাজপুর গ্রামের আলু চাষী মনতাজ আলী জানান, প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষাবাদে ৪৫-৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এবারের খরচ গেল বছরের চেয়ে ২০ হাজার টাকা বেশি। আলু বীজের অতিরিক্ত দাম না বাড়লে এই অতিরিক্ত খরচ কৃষকদের গুনতে হতো না।
এদিকে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তা বাজারসহ আশাপাশের বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। কাঁচামাল ব্যবসায়ী কমিরুল ইসলাম জানান, দাম বেশি হওয়ার কারণে এখনও পুরাতন আলু বেশি বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ২০২২ সালে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ২ হাজার ৭'শ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল। পরের বছর ২০২৩ সালে ৩'শ হেক্টর কমে ২ হাজার ৪'শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। তবে গেল বছরের দাম পেয়ে চলতি বছর আবারও ২ হাজার ৭'শ হেক্টর জমিতে আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ বেড়েছে আরও ৩'শ হেক্টর। এসব জমি থেকে পায় ৬১ হাজার ২৩০ মে.টন আলুর উৎপাদন আশা করছে কৃষি অধিদপ্তর।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল জানান, উপজেলায় সেভেন, গেনুলা ও স্টিক জাতের আলু আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। আগাম জাতের সেভেন আলু তোলা শুরু করেছে কৃষক। এতে ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক। আমরা আশা করছি, গতবারের মতো এবারেও কৃষকরা আলুর দাম পাবে এবং বাম্পার ফলন হবে।
বিডি২৪অনলাইন/সামানুর ইসলাম/সি/এমকে