দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্বে আসার পর আমূল বদলে গেছে রাজস্ব প্রশাসনের চিত্র। রাজনৈতিক চাপমুক্ত হয়ে বড় সংস্কারের পথে হাঁটছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর। মূসক নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ইতোমধ্যে ৯৪টি নিরীক্ষা শেষ করে ১৫৯.৬৬ কোটি টাকার মূসক ফাঁকি উদঘাটন করেছে, আদায় করা হয়েছে ৬১.১৬ কোটি টাকা। গত ৩ মাসে ৯ হাজার ৮২৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন প্রদান করেছে ভ্যাট অনুবিভাগ। এছাড়া ভ্যাট আইন ও বিধি সংস্কারে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকায় এনবিআর মাল্টি পারপাস হলে এক সেমিনারে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষ্যে এ সেমিনার হয়। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেমিনারে অংশ নেন  অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আব্দুল হক প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনবিআর সদস্য (মূসক নীতি) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী।

সেমিনারে আরও জানানো হয়, ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে সঠিক পরিসংখ্যানের অভাব, করদাতার সন্তুষ্টি, কর সংস্কৃতির অভাব, নিম্ন দেশজ উৎপাদনশীলতা ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অটোমেশনের পথে হাঁটছে ভ্যাট বিভাগ।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, কিছুদিন ব্যবসা করার পরেই ব্যবসায়ীরা বলেন আমাদের কর অব্যাহতি দিন। ৫০ বছর বহু শিশুকে (শিল্প) লালন করে কর অব্যাহতিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিশুদের আর কতকাল লালন করতে হবে। শারীরিকভাবে বড় হয়ে গেলেও এখনও সুরক্ষা চাচ্ছে। সুরক্ষা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে তাদের। না হলে প্রতিযোগিতামূলক হতে পারব না। এ সুরক্ষার দিন কিন্তু চলে গেছে বলেও জানান তিনি।

কর, মূসক ফাঁকি দিলে সার্বিক অর্থনীতিতে একটা প্রভাব পড়ে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা। বলেন, ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও, কর অব্যাহতি এসব নিয়ে প্রশ্ন করছে দাতা সংস্থাগুলো। বিদেশের বহু জায়গায় বাংলাদেশে ট্যাক্স রেভিনিউ, সামাজিক নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। এনবিআরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, একেবারে জোর করে আদায় করবেন। তবে অসুবিধা হয় শুনবেন, কমপ্লায়েন্স করতে একটু সহযোগিতা করবেন। বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয় সরকার বিবেচনা করবে।

বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে