দেশে দুর্নীতির সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে জিম্মি হয়ে দুর্নীতিকে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দুদকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে এ সিন্ডিকেট শক্তিশালী হয়েছে। এ বাস্তবতায় সম্প্রতি দুদকে নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শুধু নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়, বরং জনবান্ধব ও দুর্নীতিমুক্ত করতে সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজাতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকায় ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কার্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ৪৫ জন সদস্যের অংশগ্রহণে এক বার্ষিক সভায় এ তথ্য জানানো হয়। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় টিআইবি সদস্য মোহাম্মদ ইলিয়াস খান সভাপতিত্ব করেন।
সভায় জানানো হয়, চরম স্বেচ্ছাচারী শাসনকাঠামোতে সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছিল দুর্নীতি। কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা চিরস্থায়ীকরণের অপপ্রয়াস থেকে রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি, বহুমুখী দুর্বৃত্তায়ন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিস্তার যেভাবে ঘটানো হয়েছে, সেখান থেকে পরিত্রাণ পেতে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ সব প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনভাবে কাজ করার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এ সব প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সদস্যদের নিয়োগে দলীয়করণ বন্ধ করতে সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা ও অযোগ্যতার শর্ত অন্তর্ভুক্ত ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংস্কার করতে হবে।
টিআইবির সদস্যরা মনে করছেন, কর্তৃত্ববাদের বিদায়ের মধ্য দিয়ে জনমনে মুক্ত গণমাধ্যম এবং স্বাধীন ও অসঙ্কোচ মত প্রকাশের যে প্রত্যাশার সঞ্চার হয়েছে, অন্তর্র্বতী সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে- সেটা পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সেই সঙ্গে সবাই যাতে চিন্তা, বিবেক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার চর্চা করতে পারে, তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষায় বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ ক্ষমতায়িত নিজস্ব সচিবালয় স্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট সবার জন্য সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে যুগোপযোগী শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালা প্রণয়ন করার পরামর্শ দেন টিআইবি সদস্যরা।
বিগত কর্তৃত্ববাদী শাসনকাঠামোর ন্যায় স্বাধীন মত ও সাংবাদিকতার কারণে কেউ যেন হয়রানি, দোসর অ্যাখ্যায়িত বা ট্যাগিংয়ের শিকার না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে উদার ও সহিষ্ণু আচরণ করার আহ্বান জানান তারা। সাম্প্রতিক ধর্মীয় ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত সব হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানায় সদস্যরা।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে