বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার চেয়ে শোধ বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

চলতি অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশ বিদেশি ঋণ পেয়েছে ১৫৪ কোটির বেশি ডলার। বিপরীতে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে ১৭১ কোটির বেশি ডলার।  এ সময়ে বৈদেশিক ঋণ প্রতিশ্রুতি এবং বিতরণ উভয়ই উল্লেখযোগ্যভাবে কমলেও ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এ অবস্থা দেশের আর্থিক পরিস্থিতিতে আরও চাপ তৈরি করেছে। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রকাশিত তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ ৫ মাসে ঋণ প্রতিশ্রুতি কমেছে ৯১ দশমিক শূন্য শতাংশ। বিপরীতে ঋণ পরিশোধ ২৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ঋণ বিতরণ কমেছে ২৭ দশমিক শূন্য শতাংশ। এটা দেশের আর্থিক সম্পদের ওপর চাপ বাড়ানোর প্রতিফলন।

চলতি অর্থবছরের এ ৫ মাসে মাত্র ৫২ দশমিক ২৬ কোটি ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নয়ন অংশীদাররা। গত বছরে একই সময়ে দেওয়া হয়েছিল ৫৮ দশমিক বিলিয়ন ডলার। একইভাবে এ সময়ে ঋণ বিতরণও কমেছে। দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার থেকে হয়েছে এক দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে এক দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার মূলধন এবং সুদ পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে গত বছর পরিশোধের পরিমাণ ছিল এক দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে ঋণ প্রাপ্তি ও পরিশোধের বিষয়ে উদ্বেগের জানিয়েছে এখাতের বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, সামনে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক অর্থায়ন নিশ্চিত করা কঠিন হতে পারে। ঋণ প্রতিশ্রুতি এবং বিতরণ কমে যাওয়া বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কারণে হতে পারে। ঋণ পরিশোধের খরচ বৃদ্ধির ফলে অবকাঠামো এবং সামাজিক কর্মসূচির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে সরকারকে বিনিয়োগ সীমিত করতে হতে পারে।

ওদিকে ইআরডি কর্মকর্তারা বলছেন, গত জুলাই এবং আগস্ট মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে। এতে বিতরণ কমেছে। বিদেশি পরামর্শক এবং কর্মীরা অনুপস্থিতির কারণে স্থগিত হয়ে গেছে বৈদেশিক ঋণের তহবিলে নেওয়া অনেক প্রকল্প।

তারা আরও জানান, বর্তমানে ঋণ প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করছে সরকার। এতে নতুন ঋণ চুক্তির জন্য সাময়িক স্থগিত হয়েছে। পর্যালোচনা শেষ হলে ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর পরিকল্পনা করছে এবং তার লক্ষ্য পূরণের জন্য চেষ্টা করবে সরকার। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন করতে সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ উন্নয়ন অংশীদারেরা।

ওদিকে বৈদেশিক অর্থায়নে নেওয়া প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো অগ্রাধিকার দিচ্ছে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বিদেশি ঋণনির্ভর অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো। সংস্থাগুলোকে বৈদেশিক ঋণ বরাদ্দের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইআরডি।

 

বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর