২০১০ সালে ১ জানুয়ারি প্রথমবার বই উৎসব করে তৎকালীন সরকার। এরপর টানা ১৫ বছর ঘটা করে প্রতি বছর এ উৎসব করা হয়েছে। দেড় দশকের সে রীতির পরিবর্তন হয়েছে এবার। ‘অপ্রয়োজনীয় খরচ’ এড়াতে বাতিল করা হয়েছে ঘটা করে বই উৎসব।

এদিকে নতুন বছরের প্রথম দিনে প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা সব বই এক সাথে হাতে পাচ্ছে না। রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও বই ছাপানোর কাজ দেরিতে শুরু করায় শেষ করা সম্ভব হয়নি সব বই ছাপার কাজ। তাছাড়া হঠাৎ শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আসায় পাঁচ শতাধিক বই সংশোধন-পরিমার্জন করতে হয়েছে। ফলে বিগত বছরগুলোর মতো বছরের প্রথমদিনে সব বই শিক্ষার্থীর হাতে দিতে পারছে না সরকার। সব বই হাতে পেতেও আরও একমাস অপেক্ষা করতে হবে শিক্ষার্থীদের। বিনামূল্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় ২০০৯ সালে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এবার বই উৎসব বাদ দিয়ে পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করার জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ অনুষ্ঠান হবে। পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করবেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়াতে ঘটা করে বই উৎসব করতে চায় না অন্তর্র্বতীকালীন সরকার। অনলাইনে এ কার্যক্রম শুরু হবে, এরপর সুষ্ঠুভাবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে সব স্কুলে।

জানা গেছে, দেশে এবার প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থী ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩ হাজার ২৮৩ জন। তাদের জন্য ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপা হচ্ছে। প্রাথমিকের ২ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থীর জন্য ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫ কপি, মাধ্যমিক পর্যায়ে ২ কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ কপি ছাপানো হচ্ছে বই। এর বাইরে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে ৮ হাজারের বেশি ব্রেইল বই ছাপা হচ্ছে। শিক্ষকদের জন্য প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা ছাপা হবে।  এর মধ্যে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত মোট ৬ কোটি ৬ লাখ বই ছাপানো হয়েছে।  ছাপানো বইয়ের মধ্যে প্রাথমিকের পাঁচটি শ্রেণির ৩ কোটি ৯৮ লাখ, মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ির ২ কোটি ৮ লাখ বই রয়েছে। ছাপা শেষ হওয়া ৬ কোটির বেশি বই প্রাথমিকভাবে বুধবার ও বৃহস্পতিবারের মধ্যে  বিতরণ করা হবে।

বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে