সরকার থেকে দাম বাড়ালেও বাজারে ভোজ্যতেল সয়াবিনের সংকট এখনো পুরোপুরি কাটেনি। বিশেষ করে ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল পেতে ক্রেতাদের দোকান থেকে দোকানে হন্য হয়ে ঘুরতে হচ্ছে। সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় হতাশ ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই।
দোকানিদের ভাষ্য, কোম্পানি প্রতিনিধিদের কাছে বারবার অর্ডার দিলেও চাহিদা অনুযায়ী তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে সরবরাহের ঘাটতির কারণে অনেক জায়গায় বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্য।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজারের খুচরা দোকানিদের তথ্যমতে, পাইকারি পর্যায়ে বর্তমানে ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম কিছুটা কমেছে। তারপরও মিল থেকে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি এখনো। তারা জানায়, বর্তমানে বাজারে এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা দরে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের বিক্রি মূল্য ৮৫০-৮৫৫ টাকা। খোলা সয়বিন তেল লিটার প্রতি ১৮০-১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এটা বাড়তি দাম।
দোকানিরা আরও জানায়, দুই-তিন মাস হচ্ছে ডিলাররা স্বাভাবিক ও চাহিদামতো তেল সরবরাহ করছে না। অর্ডার দিয়েও তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এক দফা দাম বৃদ্ধি করা হলেও সরবরাহ স্বাভাবিক না। রমজানকে ঘিরে আরেক দফা দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে বড় ব্যবসায়ীরা।
পাইকারি বিক্রেতাদের ভাষ্য, বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের কোন সংকট নেই এখন। দাম বৃদ্ধির পর থেকে সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। চাহিদা অনুসারেই সরবরাহ করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্যারেলপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম এক হাজার টাকার বেশি কমেছে। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেলে সংকট কিছুটা আছে।
ক্রেতাদের মধ্যে অনেকে বলেছেন, বাজারে সয়াবিন তেল পযাপ্ত নেই। ২ লিটার সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য সাড়ে তিনশ লেখা থাকলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা হিসেবে ভোক্তারা প্রতিনিয়ত ঠকে গেলেও দেখার কেউ নেই।
এদিকে গত ৯ ডিসেম্বর মাসে সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে প্রতি লিটারে। ফলে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের বিক্রয়মূল্য ১৭৫ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৫৭-১৬০ টাকা, পাম তেল ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৫৭ টাকা হয়েছে। আর বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম এখন ৮৫০ টাকা, আগে ছিল ৮১৮ টাকা।
ওদিকে পবিত্র রমজান মাসে ভোজ্যতেলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে সাম্প্রতিক সয়াবিন ও পামতেলের আন্তর্জাতিক বাজার দর বিবেচনায় শুল্ক অব্যাহতি দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ অব্যাহতির মেয়াদ আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ভোজ্যতেলের ওপর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ মূসক ব্যতীত অন্য শুল্ক-করাদি প্রত্যাহার করা হয়। গতবছর অক্টোবরে এমন আদেশ জারি করেছিল এনবিআর। আর ক্যানোলা ও সানফ্লাওয়ার তেল আমদানির ক্ষেত্রে গত ১৬ ডিসেম্বর আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের পাশাপাশি ভ্যাট হ্রাস করে প্রতিষ্ঠানটি।
বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে