চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে কিনা দলটিকেই নিতে হবে সে সিদ্ধান্ত। এছাড়া নির্বাচনে কারা অংশগ্রহণ করবে, সেটা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়।

অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এ সংক্রান্ত সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে তিনি ভারতেই নির্বাসনে রয়েছেন। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর একে একে বের হয়ে আসছে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নানা চিত্র। ইতোমধ্যে হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, দাবি উঠেছে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারেরও। এ অবস্থায় চলতি বছরের শেষের দিকে নির্বাচন আয়োজনের আশা করছেন ড. ইউনূস।

এদিকে ভারতে নির্বাসনে থাকা হাসিনা এবং তার দল এ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচারের জন্য হাসিনাকে ফেরত চাচ্ছে বাংলাদেশ।

অধ্যাপক ইউনূস বিবিসিকে  বলেন,  তাদের (আওয়ামী লীগ) সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা এ নির্বাচন করতে চায় কিনা, আমি তাদের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তিনি বলেন: শান্তি ও শৃঙ্খলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। এরপর অর্থনীতি। (সাবেক সরকারের রেখে যাওয়া) এটি এক ছিন্নভিন্ন অর্থনীতি, বিধ্বস্ত অর্থনীতি। এটা এমন কিছু যেন ১৬ বছর ধরে কিছু ভয়ানক টর্নেডো হয়েছে। আমরা এখন টুকরোগুলো তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছি।

তার সরকার কত দ্রুত সংস্কার করতে পারে তার ওপর নির্বাচনের সময়সীমা নির্ভর করছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এসব সংস্কারকে প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি আমাদের ইচ্ছা মতো দ্রুত সংস্কার করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে পারবো আমরা। আর যদি সংস্কারের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।

দেশের বর্তমান দুর্দশার জন্য আগের সরকারকে দায়ী করেন অধ্যাপক ইউনূস। বলেন, “এ ধরনের ঘটনাগুলো হওয়া উচিত— সেটা আমি সমর্থন করছি না। আমি বলছি, আপনাকে বিবেচনা করতে হবে, আমরা কোনও আদর্শ দেশ বা আদর্শ শহর নই যা আমরা হঠাৎ করে তৈরি করেছি। এ অবস্থা হচ্ছে দেশের ধারাবাহিকতা যা আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি, এমন একটি দেশ যেখানে এসব বহু, বহু বছর ধরে চলছে।”

বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে