২০১৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশের ২৩ জেলার ৭৪টি উপজেলাকে দুর্গম এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এসব এলাকাকে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত  ইসির এ সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইসি সূত্র জানায়, দুর্গম এসব এলাকার বিষয় সভায় উপস্থাপন করা হয়। দুর্গম এসব এলাকার তালিকা থেকে কোনো উপজেলাকে বাদ দেওয়া হবে, নাকি নতুন কোনো উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে- সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিস্তারিত আলোচনা শেষে বিদ্যমান ২৩টি জেলার ৭৪টি উপজেলাকে দুর্গম এলাকা হিসেবেই বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জানা গেছে, চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে কার্যক্রমে নির্ধারিত হারের দেড়গুণ ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহকারী ও অন্যদের জন্য ভাতা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে একইভাবে অন্য খাতে অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে, যা স্বাভাবিক। কারণ সমতল ভূমির চেয়ে এসব এলাকায় তথ্য সংগ্রহ করা বা নির্বাচনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা অনেক কষ্টের। এসব দুর্গম এলাকায় যেমন শারীরিক পরিশ্রম বেশি, তেমনি স্বাস্থ্যের ঝুঁকিও রয়েছে।

পার্বত্য, হাওর ও দ্বীপ অঞ্চলের পাশাপাশি সমতল ভূমিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভৌগোলিক প্রেক্ষাপট ও দুর্গমতার ব্যাপকতা বিবেচনায় ভবিষ্যতে দুর্গম এলাকার তালিকা শ্রেণিভিত্তিকভাবে করা হবে বলেও জানা গেছে।

যে ৭৪টি উপজেলাকে দুর্গম এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে, সেগুলো হলো– ভোলা জেলার চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলা, বরগুনা জেলার বেতাগী, পাথরঘাটা ও বামনা উপজেলা, বাগেরহাট জেলার রামপাল, মোড়লগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা, খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা, দাকোপ ও কয়রা উপজেলা, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলা, কক্সবাজার জেলার মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলা, হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং, আজমেরীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলা, সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার, ধর্মপাশা, শাল্লা, জামালগঞ্জ, দিরাই, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা, বরিশাল জেলার হিজলা, মূলাদী ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা, সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলা, নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও খালিয়াজুরী উপজেলা, পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা, কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী ও দশমিনা উপজেলা, সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনী ও শ্যামনগর উপজেলা, পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলা, কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলা, কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলা, মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি, মহালছড়ি, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা, রামগড়, গুইমারা, লক্ষীছড়ি, খাগড়াছড়ি সদর ও দিঘীনালা উপজেলা, বান্দরবান পার্বত্য জেলার থানছি, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান সদর, রুমা ও লামা উপজেলা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার নানিয়ারচর, বরকল, বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি সদর, রাজস্থলী, লংগদু, কাউখালী, কাপ্তাই, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলাসহ সর্বমোট ৭৪টি উপজেলা। এসব দুর্গম এলাকায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচনের সময় ইসির কার্যক্রম পরিচালনায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হারে অর্থ বরাদ্দ করা হয়।

বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে