চলতি অর্থবছরে গত সরকারের আমলে নেওয়া ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েছে। পাশাপাশি ঋণ প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭ শতাংশ, সেই সঙ্গে কমেছে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতিও। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি)মাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গেল সোমবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
ইআরডির তথ্যানুযায়ী, ফেব্রুয়ারি শেষে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর কাছে থেকে ২৩৫ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতি এসেছে। আগের বছরের এ সময়ে এসেছিল ৭২০ কোটি ডলারের বেশি। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে ঋণ প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াতে হচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। দেশের সরকারি ও বেসরকারি মিলে ঋণ রয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
ওদিকে ঋণ প্রতিশ্রুতিও কমিয়ে দেওয়ায় চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে দেশের অর্থনীতিতে বিদেশি অর্থের অন্যতম উৎস উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণে পড়েছে ভাটা। তবে এ আট মাসে সবচেয়ে বিশ্বব্যাংকের আইডিএ কর্মসূচি থেকে বেশি প্রতিশ্রুতি এসেছে, পরিমাণে ৯৪ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রতিশ্রুতি এসেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) থেকে। এ অর্থবছর এডিবির ঋণ প্রতিশ্রুতি ৭০ কোটি ডলার।
ঋণ প্রতিশ্রুতি কমার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে বিদেশি অর্থ আসার অন্যতম উৎস প্রকল্পে অর্থছাড়ও কমেছে। ফেব্রুয়ারি শেষে অর্থছাড় হয়েছে ৪১৩ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। গত বছর এ সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা বিভিন্ন প্রকল্পে ৪৯৯ দশমিক ৫২ শতাংশ অর্থছাড় করেছিল। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে অর্থছাড় কমেছে ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।
ইআরডি জানায়, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের আগে দেওয়া সব ঋণ পরিশোধের চাপ এখন প্রতিমাসেই বাড়ছে। এ অর্থবছরের ৮ মাসে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ২৬৩ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। আগের বছর এ সময় পরিশোধ করেছিল ২০৩ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছর বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আমেরিকা ও জাপানের কাছ থেকে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার ও এডিবির কাছ থেকে ১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে ৯ বিলিয়ন ডলারের ঋণ। এর মধ্যে এডিবির ২৭৫ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, বিশ্বব্যাংকের ২০৮ কোটি ডলার এবং আমেরিকা ও জাপানের যৌথভাবে ২০৪ কোটি ডলারের বেশি রয়েছে।
বিডি২৪অনলাইন/ইএন/এমকে