বাংলা পঞ্জিকার পাতায় আজ পহেলা বৈশাখ, নববর্ষের প্রথম দিন। পহেলা বৈশাখ শুধু নতুন বছরের শুরুই নয়, বাঙালির জীবনে এদিনে জীর্ণ-পুরোনোকে ছুড়ে ফেলে নতুনের আবাহন করা হয়। ফ্যাসিবাদমুক্ত নতুন এক বছর বরণ করছে জাতি। বর্ষবরণে সরকারি ও বেসরকারিভাবে আলাদা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে সকালে বাণী দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। এবার ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে হচ্ছে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা। ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ইউনেস্কো স্বীকৃত মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ রাখা হয়েছে।
মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। তখন চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সব খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে বাধ্য থাকতো। এর পর দিন পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদের মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন হতো। তখন এ উৎসব একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়, সময়ের সঙ্গে রূপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এ পর্যায়ে এসেছে।
রাজধানী ঢাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের হয়। শোভাযাত্রার মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং একাত্মতা উদ্যাপিত হয়, এটা দেশব্যাপী একটি পরিচিত সাংস্কৃতিক আয়োজনে পরিণত হয়। এবারের শোভাযাত্রায় ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে তরমুজের মোটিফ যুক্ত করা হয়, যা সাম্প্রতিক সময়ের এক রাজনৈতিক বার্তাবাহী উপাদান। শোভাযাত্রায় থাকে সুলতানি ও মুঘল আমলের ১০টি মুখোশ, ৮০টি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, ২০টি রঙিন চরকি, ২০০টি বাঘের মাথা, তালপাতার ৮টি সেপাই, ১০টি পলো, ৫টি তুহিন পাখি, ৬টি মাছ ধরার চাই, ৪টি পাখা, ২০টি মাথাল, ২০টি ঘোড়া, ৫টি লাঙল, ৫টি মাছের ডোলা এবং ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের লোকজ চিত্রাবলীর ক্যানভাস।
বিডি২৪অনলাইন/এনএম/এমকে