হত্যার আগে ধর্ষণের শিকার হয় জুঁই, ঘাতকদের মধ্যে আছে চাচা

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
২০ এপ্রিল ২০২৫

অভিযুক্ত সোহেল রানা

আম কুড়াতে খেলতে আসলে জুঁইকে নিয়ে যাওয়া হয় কলাবাগানে। সেখানে ৪ জন তাকে ধর্ষণ ও পাশবিক নিযাতন করে। এরপর আধা মরা জুঁইকে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভেঙে পড়া জুঁইকে সেখানে ধর্ষণ করে আরেকজন। এরপর হত্যা শেষে তার মুখে অ্যাসিড জাতীয় পদার্থ নিক্ষেপ করা হয়।

চাঞ্চল্যকর আকলিমা খাতুন জুঁই হত্যা মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তারাই ধর্ষণ ও হত্যা করেছে জুঁইকে। তাদের কাছে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জুঁইয়ের নিখোঁজ হওয়া থেকে হত্যা কিভাবে হয়েছে, সেটা সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে। এ নিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পুলিশ।

আকলিমা খাতুন জুঁই নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও প্রবাসী জাহিদুল ইসলামের মেয়ে। তার বয়স ৭ বছর। গত ১৫ এপ্রিল  পাবনার চাটমোহরের রামপুর এলাকার আবাদি ভুট্টা ক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগের দিন বিকাল থেকে নিখোঁজ ছিল সে।

এ মামলা গ্রেফতার ৫ জন হচ্ছে- বড়াইগ্রামের দিয়ার গাড়ফা গড়মাটি গ্রামের সিয়াম আলম, রামপুর গ্রামের শেখ সাদী, গাড়ফা গ্রামের সাকিব, রামপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ, গাড়ফা গ্রামের সোহেল রানা। এদের মধ্যে সোহেল রানার বয়স ২৫ বছরের বেশি। বাকিদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। একাধিক সূত্র জানায়, সোহেল রানা জুঁইয়ের বাবার আপন খালাতো ভাই, সম্পর্কে জুঁইয়ের চাচা তিনি।

ঘটনার বিবরণ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছে পুলিশ। বলা হয়েছে, অভিযুক্ত শেখ সাদী, সোহেল আব্দুল্লাহ এবং সাকিব- ৪ জন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে খারাপ মেয়ের সঙ্গে ফুর্তি করার পরিকল্পনা এটেছিল। এ জন্য নিজেদের মধ্যে চাদা ধরে টাকা সংগ্রহ করে মাদক কেনে তারা। শেখ সাদী জুঁইদের বাড়ির পাশে আম গাছের কাছে অবস্থান করছিল। এক পর্যায়ে জুঁই জনৈক নয়নের বাড়ীর পাশে আম বাগানে আম কুড়াতে খেলতে আসলে শেখ সাদী তার হাত ধরে জনৈক দুলাল হোসেনের কলাবাগানে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই ছিল সাকিব আব্দুল্লাহ। কলাবাগানে জন মিলে জুঁইকে ধষণ পাশবিক অত্যাচার করে। পরবর্তীতে সবাই মিলে জুঁইকে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে সিয়ামকে উদ্বুদ্ধ করে  তাকে দিয়ে জুঁইকে ধর্ষণ করানো হয়। পরে জুঁইয়ের পরিহিত প্যান্ট দিয়ে শেখ সাদী শ্বাসরোধে জুঁইকে হত্যা করে। সোহেল রানা ভুক্তভোগীর ঘাড় মটকে দেয় এবং সাকিব তার পা ধরে রাখে। আব্দুল্লাহ জুইয়ের মুখে এসিড জাতীয় পদার্থ নিক্ষেপ করে।

জুঁইয়ের বাবা জাহিদুল ইসলাম ২ মেয়ে আর এক ছেলের বাবা। জীবিকার জন্য ২ বছর ধরে মালয়েশিয়াতে রয়েছেন তিনি। ভাইবোনদের মধ্যে জুঁই দ্বিতীয়। সে স্থানীয় আজেদা নুরাইয়া ক্যাডেট মাদ্রাসার শিশু শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।

পুলিশ বলছে, পাবনার পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খাঁনের নির্দেশনায় চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) নেতৃত্বে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে ব্যাপকভাবে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাটমোহর বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ নাটোরর ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযানে সিয়াম আলমকে পুলিশি হেফাজতে নেয়। এরপর তার মুখ থেকেই এ হত্যাকান্ডের ক্লু পায় পুলিশ।

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে



মন্তব্য
জেলার খবর