রসুনের সাথী ফসল হিসেবে বাঙ্গি সহজেই চাষ করা যায়। এভাবে লাভজনক হওয়ায় নাটোরের গুরুদাসপুরে চাষিরা ১০ বছর ধরে বাঙ্গি চাষ করছেন। কিন্তু এ বছর চাহিদা ও নায্য মুল্য না থাকায় হতাশ তারা। জমি থেকে সংগ্রহ ও পরিবহন খরচ না ওঠায় মাঠেই পড়ে থাকছে বাঙ্গি, অধিকাংশ নষ্ট হচ্ছে পঁচে।
চাষিরা জানান, এ বছর ক্রেতার চাহিদার ঘাটতি ও দরপতনে উৎপাদিত বাঙ্গি নিয়ে তারা বিপাকে পরেছেন। শ্রমিক মজুরি ও পরিবহন ব্যয় না ওঠায় আবাদি জমি থেকে রসালো এ সুমিষ্ট ফল সংগ্রহে কৃষকরা আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে ক্ষেতেই পচে নষ্ট হচ্ছে। এমন হলে আগামীতে এ অঞ্চলের চাষিরা এ ফসল চাষে আগ্রহ হারাবেন বলে জানান তারা।
উপজেলার পোয়ালশুড়া দড়িপাড়ার কৃষক আব্দুল ওয়াহাব জানান, তিনি এবছর দুই বিঘা জমিতে বাঙ্গির আবাদ করেছেন। সমপরিমাণ জমিতে গেল বছর ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হলেও এবছর বিক্রি করেছেন মাত্র ১৮ হাজার টাকা।
পোয়ালশুড়ার সানোয়ার হোসেন, নয়াবাজারের আনারুলসহ অন্তত ১০ জন কৃষক জানান, তারা অধিকাংশ বর্গাচাষি। জমির লীজমুল্য, চাষ, বীজ,সার,পানিসেচ,শ্রমিক মুজুরী মিলিয়ে প্রতিবিঘা রসুন চাষে খরচ লক্ষাধিক টাকা। রসুনের সাথী ফসল বাঙ্গি চাষে খরচের প্রায় অর্ধেক টাকা উঠে আসতো। কিন্তু এবছর দাম না থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে প্রণোদনা ও সুদমুক্ত কৃষি ঋনের দাবী তাদের।
স্থানীয় আড়ৎদার শাহীন আলী বলেন, প্রতিদিন গুরুদাসপুর থেকে ৮/১০ ট্রাক বাঙ্গি দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারী বিক্রি হয়। গেল বছর প্রতিটি বাঙ্গির পাইকারী দাম ছিলো ৩২ টাকা। কিন্তু এ বছর চাহিদা না থাকায় সেই বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ৮ টাকায়। ক্রেতা চাহিদা না থাকায় কমদামে কিনেও বিক্রি হচ্ছে না। এতে পচে নষ্ট হচ্ছে বাঙ্গি, পুজি হারাচ্ছেন পাইকাররা।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ জানান, গুরুদাসপুরের সুমিষ্ট রসালো বাঙ্গির খ্যাতি দেশজুড়ে। এবছর ৮৫০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছে। অনুকুল আবহাওয়া,কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক মাঠ পরিদর্শন ও পরামর্শে চাষি বাঙ্গির ফলন ভালো ফলন পেয়েছেন। তবে এ বছর দামের দরপতন হলেও চাষিদের ক্ষতি হবে না।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে