করোনা থেকে বাঁচতে বাড়ির বাইরে গেলে মাস্ক আর ঘরে ফিরলে নাকে-মুখে গরম
পানির ভাপ নিতে সবাইকে আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।একই সঙ্গে
করোনাভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে, এজন্য জনসমাগম এড়াতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি
একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশন শুরুর দিনে বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) এই তিন
কাজ করতে দেশবাসীকে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় সংসদে আনা শোকপ্রস্তাবের
ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এই অনুরোধ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার করোনাভাইরাস মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছিল। সবার মনে
হচ্ছিল সবকিছু যেন ঠিক হয়ে গেছে। সব কিছু নিয়ন্ত্রণেও এসেছিল, অর্থনৈতিক কাজগুলোও
চলছিল। কিন্তু আবার বিশ্বব্যাপী এই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এবারের
করোনাভাইরাসটি হঠাৎ করে খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশে ২৯, ৩০ ও ৩১ মার্চ— এতো
দ্রুত বেড়ে গেছে, যেটা চিন্তাও করা যায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছি বলে বোধ হয় মানুষের মাঝে একটি
বিশ্বাস জেগে গেছে। এজন্য সবাই ভাবছিল কিছু হয়তো হবে না। আমি বার বার বলেছিলাম
ভ্যাকসিন নিলেও সাবধানে থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলতে হবে। এই স্বাস্থ্যবিধি মানাটা
কিন্তু বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা হিসাব করে দেখেছি, যতগুলো বড় বড় বিয়ের অনুষ্ঠান।
যারা এই বিয়ে বাড়িতে গেছে, ফিরে এসে তাদের অনেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
যারা কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে চলে গেছেন, সেখান থেকে যারা এসেছেন, তাদের
বেশি করে ধরেছে। এই দাওয়াত, খাওয়া-টাওয়া, দোকান-পাটে ঘোরাঘুরি অতিরিক্ত বেড়ে
গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে অনুরোধ করবো, মাস্ক পরে থাকবেন। কারণ
করোনাভাইরাস নাক থেকে গিয়ে সাইনাসে আক্রমণ করে। সেই ক্ষেত্রে সবাইকে মাস্ক পরে থাকতে
হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে নাকে ভাপ নেওয়া। ভাপ নেয়াটা খুবই কাজে লাগে। যখনই কেউ একটু
বেশি মানুষের সঙ্গে মিশবেন বা দোকানপাট-অফিসে যাবেন। ঘরে ফিরে একটু যদি গরম পানির
ভাপ নেন, খুব ভালো হয়। এটা খুব কঠিন কাজ নয়। একটি কাপড় দিয়ে মাথাটা ঢেকে গরম
পানির ভাপটা নিঃশ্বাসে নিলে পরে নাকের ভেতরে সাইনাস পর্যন্ত চলে যায়।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে তার সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা
অফিস আদালতে বলে দিয়েছি- সীমিত লোক নিয়ে কাজ করতে হবে। বেশি যেন মেশামিশি না হয়,
সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। অনেকেই সিমট্রম ছাড়াই করোনায় আক্রান্ত থাকতে পারেন। তার হয়তো
কোনও সমস্যা হচ্ছে না, কিন্তু যার সঙ্গে কথা বলছেন বা মিশছেন, তার কিন্তু হয়ে যাচ্ছে। এটাও
মাথায় রাখতে হবে।
এমকে