৭দিন মানতে হবে ১১ নির্দেশনা

০৫ এপ্রিল ২০২১

উদ্ভুদ করোনা পরিস্থিতিতে আজ সোমবার থেকে সাতদিন সবাইকে ঘরের বাইরে দৈনিককার চলাফেরা ও কর্মকাণ্ডে মানতে হবে ১১ টি নির্দেশনা। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসব নির্দেশনা দিয়ে রোববার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করলে সংশ্লিষ্টজনের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা। প্রজ্ঞাপনে ‘লকডাউন’ শব্দ ব্যবহার না করা হলেও এই সাতদিনকে ‘লকডাউন’ হিসেবেই দেখছেন সাধারণ মানুষ।এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জাতীয় সংসদে এই সাতদিনকে ‘লকডাউন’বলেছেন।

 

এই সাতদিন জরুরি সেবা ছাড়া প্রায় সবকিছুই বন্ধ থাকবে।চলবে না কোনো গণপরিবহন।অভ্যন্তরীণ রুটে বন্ধ থাকবে বিমান চলাচল।জরুরি কাজের জন্য সীমিত পরিসরে অফিস খোলা থাকছে। জেলা ও মাঠ প্রশাসন এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।

 

প্রজ্ঞাপনে দেওয়া নির্দেশনার মধ্যে কিছুটা অস্পষ্টতাও দেখা দিয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে কর্মস্থলে (বেসরকারি প্রতিষ্ঠান) যাওয়া যাবে কি-না, স্পষ্ট নয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কর্মীদের আনা–নেওয়ায় নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার কথা বলা হলেও সেটি কীভাবে করা হবে- কোনো দিকনির্দেশনা নেই।

 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শর্ত সাপেক্ষে সোমবার সকাল ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলি ও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পণ্য পরিবহন, উৎপাদনব্যবস্থা ও জরুরি সেবার ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। বিদেশগামী ও বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি সেবা যেমন ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বা জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাকসেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস ও তাদের কর্মচারী এবং যানবাহন নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস শুধু জরুরি কাজের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে।শিল্পকারখানা ও নির্মাণকাজও চলবে।শিল্পকারখানার শ্রমিকদের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ শ্রমিকদের জন্য শিল্পকারখানা এলাকায় ‘ফিল্ড হাসপাতাল’ বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগও ঢাকায় সুবিধাজনক জায়গায় ‘ফিল্ড হাসপাতাল’ স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ করা যাবে। কোনও অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না। শপিং মলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। তবে দোকানে পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের মধ্যে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কোনও ক্রেতা সশরীরে যেতে পারবে না। কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।

 

এমকে

 

 


মন্তব্য
জেলার খবর