কঠোর হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

০৬ এপ্রিল ২০২১

করোনার সংক্রমণ রোধে সাত দিনের জন্য জারি করা নির্দেশনাগুলো কঠোরভাবে পালনের
নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রয়োজনে আইন প্রয়োগে কঠোর হওয়ার নির্দেশ
দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ
সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। সোমবার (৫ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল এই বৈঠকে
সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে আর মন্ত্রীরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকের বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব আরও জানান, চলমান বিভিন্ন বিধিনিষেধের বিষয়ে
পর্যালোচনা করে আগামী বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রোববার (৪
এপ্রিল) প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে সোমবার থেকে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এসব বিধিনিষেধ জারি করা
হয়।

প্রসঙ্গত, প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে এই এক সপ্তাহ সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে
যাওয়া যাবে না। জরুরি ওষুধ কিংবা একান্ত প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া আর কিছু কিনতে বাইরে
যাওয়া যাবে না। কাজ শেষে দ্রুত বাসায় ফিরতে হবে। দাফন বা সৎকারের কাজে বাইরে যাওয়া
যাবে। সব গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। ব্যক্তিগত যানবাহনও চালানো যাবে না। মোটরসাইকেল ও
অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচল করা যাত্রীবাহী বিমানও চলবে না। পণ্যবাহী ও উৎপাদনের কাজে
নিয়োজিত পরিবহন এ নির্দেশের আওতায় পড়বে না। যারা বিদেশে যাবেন, অথবা যারা বিদেশ
থেকে এসেছেন, তারা যাতায়াতের ক্ষেত্রে যে পরিবহন ব্যবহার করবেন তা এ নির্দেশের আওতায়
পড়বে না। রেস্তোরাঁ খোলা রাখা যাবে। ভেতরে বসিয়ে কোনও ক্রেতাকে খাবার পরিবেশন করা
যাবে না। খাবার প্যাকেট করে নিয়ে যাওয়া যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার ডেলিভারি করা যাবে।
দোকান ও শপিং মল বন্ধ থাকবে। অনলাইনে কেনাকাটা ও ডেলিভারির সুযোগ থাকবে। কোনও
ক্রেতা সশরীরে শপিং মলে যেতে পারবেন না।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং জরুরি সেবা,
যেমন—স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, সমুদ্র, স্থল ও নৌবন্দরগুলোর
কার্যক্রম চলবে। টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাক বিভাগসহ অন্যান্য জরুরি পণ্য ও সেবার সঙ্গে
সম্পর্কিত অফিস, তাদের কর্মী ও যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না। চাল, ডাল,
তেল, পেঁয়াজ, সবজি, মাছ-মাংস ইত্যাদি কিনতে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত

কাঁচাবাজারে যাওয়া যাবে। বিকাল ৪টার পর এসব দোকান ও বাজার বন্ধ করতে হবে।
কাঁচাবাজার খোলা জায়গায় নির্ধারিত দূরত্বে বসবে। ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা যাবে।
এক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ওষুধের দোকানে একসঙ্গে একজনের
বেশি ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। দোকানের আয়তনের ওপর ভিত্তি করে দুজন
ঢুকতে পারবেন, এর বেশি নয়। জরুরি কাজের জন্য সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি,
স্বায়ত্তশাসিত ও আদালত খোলা থাকবে। জরুরি কাজের জন্য যাদের প্রয়োজন, তাদেরই অফিসে
আনার ব্যবস্থা করতে হবে। গার্মেন্টস ও কারখানা খোলা থাকবে। কারখানার নিজস্ব গাড়িতে
শ্রমিকদের আনতে হবে। কাজ শেষে পৌঁছে দিতে হবে। কারখানার গাড়ির ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা
প্রযোজ্য হবে না। কারখানার কাছাকাছি এলাকায় শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করতে
হবে। সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে মালিকদের নিজ উদ্যোগে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের
লেনদেন চালাতে সারা দেশেই ব্যাংক খোলা থাকবে সীমিত সময়ের জন্য। এই সময়ে দেশের
সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ রাজধানী ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করবে।
নির্দেশনা মানার ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে স্থানীয় প্রশাসন। পুলিশ, বিজিবি ও আনসার
সদস্যরা পাড়া-মহল্লায় সার্বক্ষণিক টহল দেবেন। সরকারি আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর