ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ- চলতি বছরের এই দুই মাসে ৮ জন নারীকে উদ্ধার করেছে জামালপুর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একই সঙ্গে গত তিন মাসে গ্রেফতার করা হয়েছে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় দীর্ঘদিন পলাতক থাকা এজাহারনামীয় আসামিদের। উদ্ধার হওয়া আট নারী ধর্ষণ, অপহরণ ও অপহরণে সহায়তা সংক্রান্ত ৮টি মামলার ভিকটিম। উন্নত তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও ম্যানুয়েল ইনটেলিজেন্স কাজে লাগিয়ে শেরপুর, জামালপুর, টাঙ্গাইল ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকায় এসব নারীর পরিচয় প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, জামালপুর আদালতে বিভিন্ন সময়ে হওয়া এই আটটি মামলা তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত । এসব মামলার ভিকটিম উদ্ধাররের পর তাদের মেডিকেল পরীক্ষা, বয়স নির্ধারণ পরীক্ষা সম্পন্নের পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় ভিকটিমের জবানবন্দি আদালতে রেকর্ড করার ব্যবস্থা করে সিআইডি। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনায় কয়েকজন ভিকটিমকে গাজীপুর কিশোরী সংশোধনাগার এবং বাকীদেরকে তাদের অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই এসব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডি জামালপুর’র ইনচার্জ সহকারী পুলিশ সুপার এস.এম মনসুর মূসা।
এই আট মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদি মর্জিনা ( ছদ্মনাম) খাতুন। তিনি বলছেন, তার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছিল। পাশের গ্রামের, নিজের বাড়ি থেকে কিলো দেড়েক দুরে গ্রামটি, সেখানকার বাসিন্দা এক বখাটে ছেলে এই অপহরণের সঙ্গে জড়িত। মামলা করার পর তদন্তভার পায় সিআইডি। অল্প সময়ের মধ্যেই তার মেয়েকে উদ্ধার করে সিআইডি। উদ্ধারের পর মেয়েকে আদালতে সোর্পদ করা হয়। তিনি বলছেন, তদন্তকালে সিআইডির আন্তরিকতায় তিনি খুশি। জানান, তার দুই ছেলে আর এক মেয়ে। বড় ছেলে বিদেশ থাকেন, ছোট ছেলে চাকরি করেন; স্বামী পেশায় কৃষক আর তিনি গৃহিনী। মেয়েকে অপহরণের পরে তিনি ভেঙে পড়েছিলেন। প্রায় মাস খানেকের বেশি সময় তার হদিস ছিল না।
এদিকে সিআইডি জামালপুর সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ- এই তিন মাসে বিভিন্ন মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে সিআইডি। এর মধ্যে ২০১৭ সালের অপহরণ মামলায় পলাতক আসামি মোঃ মাজেদকে গত ১১ মার্চ গ্রেফতার করেন পুলিশ পরিদর্শক গোলক চন্দ্র বসাক। মোঃ মাজেদ জামালপুরের মাদারগঞ্জ থানার জাংগালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। একই বছরের উপ-পরিদর্শক জাকির হোসেন হত্যা মামলার পলাতক আসামি আলী খানকে চার বছরের মাথায় গ্রেফতার করা হয়েছে। আলী খান জামালপুর সদরের কেন্দুয়া নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডি জামালপুরের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক মামলা তদন্ত ও আসামি গ্রেফতার ভবিষ্যতেও অব্যহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সিআইডি জামালপুর’র ইনচার্জ সহকারী পুলিশ সুপার এস.এম মনসুর মূসা।
এমকে