রাজধানীতে এবার পাঠাও’য়ের চালকের কাছে যৌন হয়রানীর শিকার তরুনী!

০৪ জুলাই ২০১৭

অনলাইন ট্র্যান্সপোর্টেশন নেটওয়ার্ক কোম্পানি উবারের বিরুদ্ধে চলমান গাড়িতে ঢাকায় নারী যাত্রীর সামনে উবার চালকের ‘অশালীন আচরণে যৌন হয়রানী’ করার অভিযোগে নেট দুনিয়ায় তোলপাড় শেষ না হতেই মাত্র একদিন পরেই এবার একই প্রক্রিয়ায় পরিচালিত বাংলাদেশি মোটরসাইকেল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পাঠাও-এর এক চালককে বরখাস্ত (ব্যানড) করেছে প্রতিষ্ঠানটি। রবিবার বিকেলে এক নারী যাত্রীকে উত্যক্ত করার অভিযোগে পাঠাও’র মোটরসাইকেল চালককে বরখাস্ত করা হয় বলে জানা গেছে।

২ জুলাই রবিবার রাত ১১ টা ৫৬ মিনিটে ফেইসবুকে If you’re a girl, DO NOT use Pathao to travel শিরোনামে অভিযোগ বর্ণনা করে একটি স্ট্যাটাস দেন এলেনা হুসাইন নামের ওই তরুনী। পরবর্তীতে এই অভিযোগ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া শুরু করলে এক ঘন্টার মধ্যেই রাত ১২টা ৪২ মিনিটে পাঠাওর ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ ফাহাদের পক্ষ থেকে পাঠাও পেইজ থেকে জানানো হয় অভিযুক্ত চালক মোহাম্মদ আহসানুল ইসলামকে তারা বরখাস্ত করেছে।

ঘটনার বিস্তারিত লিখে ফেইসবুক স্ট্যাটাসে এলেনা জানান, 'আজ(রবিবার) ৩টা ১৬র দিকে আমি প্রথমবারের মতো পাঠাও কল করেছিলাম। আমি বন্ধুদের সাথে বসুন্ধরায় ছিলাম। আমার তাড়াতাড়ি বাসায় ফেরার দরকার ছিল, কারণ আমি অসুস্থ বোধ করছিলাম। আমি প্রথমে উবার ডাকতে গিয়ে দেখি সেখানে খরচ অনেক বেশি, আর সিএনজিতেও আমার কিছু খারাপ অভিজ্ঞতাও আছে, তাই আমি এই ঝুঁকিটি নিয়েই ফেললাম।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে পাঠাও চালক আমার সাথে যোগাযোগ করে এবং লোকেশন ঠিক করি যেখান থেকে দেখা করব। যখন সে আসে আমাকে কোন হেলমেট নিতে বলেন নি। আমি তাকে ওঠার আগেই বলে নেই যে এটা আমার পাঠাওতে প্রথম রাইড, আর প্রথমবারের মতোই আমি মোটরসাইকেলে উঠছি।

সৌভাগ্যবশত আমাকে তুলে দিতে আমার বন্ধুরাও এসেছিল এবং তারা আমার ছবি তুলছিল। কিন্তু তখন ওই চালক কড়াকড়িভাবে জানিয়ে দিলো ছবি তোলা নিষেধ। আমি শুধু এইজন্য মেনে নিয়েছিলাম কারণ, আমার বন্ধুদের কাছে শুনেছি পাঠাও নাকি নিরাপদ সার্ভিস। তাই আমিই পাঠাওর বাইকে উঠেছি।

এলেনা হুসাইন জানান, আমি যখন বাইকে উঠি তখন আমার নিরাপত্তার জন্য উনি আমাকে আরও কাছে এসে শক্ত করে ধরতে বলে। কিন্তু আমার কাছে কেন যেন মনে হয়েছে তার অন্যরকম চিন্তা ছিল তাই সে আমাকে বার বার একই কথা বলছিল। যখন আমরা ফ্লাইওভাররে কাছে পৌঁছালাম তখন সে বলল, আমি ঠিকানা চিনিনা আর ফ্লাইওভারের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। পরবর্তীতে সে সঠিক পথে যাওয়া শুরু করে যা আমি শুরু থেকেই নির্দেশনা দিচ্ছিলাম। ফাইনালি যখন আমরা ফ্লাইওভারে উঠলাম তখন দেখলাম ওই চালক তার লুকিং গ্লাসটা আমার চেহারার দিকে তাক করছে এবং হেলমেটের গ্লাসটা খুলে আয়নার ভেতর দিয়ে সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

তিনি আরও বলেন, এই বিষয়ে আমি তাকেই কিছুই বলিনি কারণ, আমি জানিনা বাইক চালানোর সময় কি হয়। আর এটাকে স্বাভাবিক ভেবেছি যতক্ষণ না তিনি রিজেন্সির কাছাকাছি জায়গায় থামলেন এবং বললেন কয়েকটি সেলফি তুলবেন যা তার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে আর পাঠাও’র কাজেও লাগবে। এর আগে আমি দেখেছি অনেকেই চালকের সাথে ছবি তোলে, তাই স্বাভাবিক এভবে আমিও অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবেই আমি তাকে মানা করি কারণ সে যখন ছবি তুলছিলো তখন বিশেষভাবে আমাকে তার কাঁধে হাত রাখার জন্য অনুরোধ করে।


মন্তব্য
জেলার খবর