যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট ফার্ম পুষছে সরকার: রুমিনি

২৩ জানুয়ারী ২০২২

নিজের দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে র‌্যাবের কয়েকজন কর্মরর্তার ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশনের রিপোর্ট প্রকাশের পর দেশটিতে প্রয়োজনে লবিষ্ট, ল ফার্ম নিয়োগের কথা ওঠেছে সরকারের তরফ থেকে। এ লবিষ্ট নিয়োগ নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে লবিষ্ট পুষছে সরকার। আর এর পেছনে দেশের জনগনের দেওয়া করের কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। একাদশ জাতীয় সংসদের চলমান অধিবেশনের রোববারের (২৩ জানুয়ারি) বৈঠকে এমনটাই দাবি করেছেন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি রুমিন ফারহানা। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।

রুমিন বলেন, এ নিয়ে প্রথমে খুব কড়া ভাষায় আমেরিকাকে আক্রমণ করলেও এখন গলার স্বর নিচু করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আর সব মন্ত্রী। নিজেদের সমস্যা খতিয়ে দেখার আলাপ হচ্ছে এখন। তার দাবি- গত বছর একটি ফার্ম বিজিআরকে ৩ লাখ ২০ হাজার ডলার (আনুমানিক ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা) দিয়েছে সরকার। এছাড়াও গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিডল্যান্ডার গ্রুপের সঙ্গে ৪০ হাজার ডলারে এক মাসের জন্য একটি চুক্তি করেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম। একই সময়ের জন্য কোনওয়াগো কনসালটিংয়ের সঙ্গেও বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের আরেকটি চুক্তি হয়। ৩৫ হাজার ডলার অগ্রিম দেওয়ার শর্তে হওয়া চুক্তিতে সই করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

রুমিন আরও দাবি করেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ অ্যালক্যাড অ্যান্ড ফে নামের লবিং প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ১২ লাখ ডলারের (১০ কোটি টাকার বেশি) বেশি দিয়েছে। ২০০৫, ২০০৬ ও ২০০৭ সালে এ টাকা দেওয়া হয়।

আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর এক মজার ঘটনা দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে রুমিন জানান, এখন আর গভীর রাতে সন্ত্রাসীদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যাচ্ছে না র‌্যাব। সন্ত্রাসী ধরতে যাওয়া পুলিশ বা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলিও ছুড়ছে না আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা। পালানোর সময় কোনও নির্দিষ্ট মানুষও মারা যাচ্ছে না।

মার্কিন চাপে সরকার এখন নানাদিকে তোড়জোড় শুরু করেছে বলে দাবি করেন রুমিন। বলেন, গুম হওয়া বেশ কিছু মানুষের ব্যাপারে জাতিসংঘ তথ্য চাওয়ায় সরকার ব্যাপারটির সমাধান করতে চাইছে। গুম হওয়া মানুষদের পরিবারের ওপর নতুন করে নিপীড়ন চালাচ্ছে। তাদের স্বজনকে কেউ তুলে নিয়ে যায়নি- এমন কথার লিখিত বিবৃতি আর সাদা কাগজে সই দিতে বাধ্য করছে পুলিশ।

রুমিন বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, বিরোধী দল-মত দমন, বিরাজনীতিকরণ, সেপারেশন অব পাওয়ার মুছে ফেলে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের অধীনস্থ করা, সবকিছুর ফল— যুক্তরাষ্ট্রের এ মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশনের রিপোর্ট। রুমিনের তার বক্তব্যে নির্বাচন কমিশন গঠন; নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়টিও তুলে ধরেন।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর