স্বামীর আত্মহননের প্ররোচনায় জড়িতদের বিচার চাইলেন স্ত্রী

১১ এপ্রিল ২০২১

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা

চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল মোরশেদ চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনাটিকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী ইশরাত জাহান চৌধুরী। একই সঙ্গে এ ঘটনার নেপথ্যে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারও দাবি করেছেন তিনি। রোববার (১১ এপ্রিল) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন।  

 

ইশরাত জাহান চৌধুরী মনে করেন পাওনা টাকা পরিশোধ করার পরও আরো বেশি টাকা দাবি করে দিনে দিনে ক্রমাগত মানসিক চাপ ও হুমকি দিয়ে তার স্বামীকে আত্মহত্যায় বাধ্য করা হয়েছে। তার স্বামী আত্মাহত্যা করতে পারেন না। তিনি বলেন, এটা আমার দৃষ্টিতে একটা মার্ডার।

 

বুধবার (৭ এপ্রিল) নগরীর হিলভিউ আবাসিক এলাকার নাহার ভিলা নামের বাসা থেকে আবদুল মোরশেদ চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।ভুক্তভোগী একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ছিলেন। লাশ উদ্ধারের পর পাওয়া সুইসাইড নোটে মোরশেদ লিখেছেন, ‘আর পারছি না। সত্যি আর নিতে পারছি না। প্রতিদিন একবার করে মরছি। কিছু লোকের অমানসিক প্রেসার আমি আর নিতে পারছি না। প্লিজ, সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। আমার জুমকে (মেয়ে) সবাই দেখে রেখো। আল্লাহ হাফেজ।' এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল ইশরাত জাহান চৌধুরী পাঁচলাইশ থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার একটি মামলা করেন। মামলায় পারভেজ ইকবাল, জাবেদ ইকবাল, সৈয়দ সাকিব নাঈম উদ্দিন, যুবলীগ নেতা রাসেল ও অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে আসামি করা হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইশরাত জাহান চৌধুরি বলেন, ‘আমার স্বামীর ফুফাতো ভাই জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, পারভেজ ইকবাল চৌধুরী ও পাঁচলাইশের সৈয়দ সাকিব নাঈম উদ্দীনের কাছে থেকে ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যবসাসূত্রে ২৫ কোটি টাকা নেয় মোরশেদ। ২০১৮ সালের লভ্যাংশসহ তাদের পরিশোধ করা হয় ৩৮ কোটি টাকা। এরপর থেকে আরও টাকা দাবি করতে থাকেন তারা। এ জন্য আমার স্বামীকে তারা ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিকভাবে চাপ এবং হুমকি–ধমকি দিতে থাকে।

 

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের মে মাসে আমার স্বামীকে পাঁচলাইশের এম এম টাওয়ারে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তারা আরও ১২ কোটি টাকা বাড়তি পায় উল্লেখ করে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে সই নেয়া হয়। তারা আমার স্বামী, আমার ও আমার মেয়ের পাসপোর্ট নিয়ে নেয়, আজ পর্যন্ত তা ফেরত পাইনি।' এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় তখন কোনো মামলা নেয়া হয়নি বলে ইশরাতের অভিযোগ।

 

২০১৯ সালে তাদের হিলভিউর বাসায় হামলা করা হয় বলে অভিযোগ করেন ইশরাত। তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত আমার স্বামীকে হয়রানি, মানসিক নির্যাতন ছাড়াও বাসায় হামলা, কন্যাকে অপহরণ এবং স্বামীকে খুন করার হুমকি দেয়া হয় অনেকবার। তাদের নির্যাতনের কারণেই মূলত আমার স্বামী আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়। আত্মহত্যার আগের দিন কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা রাসেল পরিচয়ে একটি নম্বর থেকে হুমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ইশরাত।

 

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল মোরশেদ চৌধুরীর আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে তার স্ত্রী একটি মামলা করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

 

ডিকেটি/এমকে

 

 


মন্তব্য
জেলার খবর