আসামি সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক, ক্ষতি পূরণ পাবেন হতাহতরা

১৮ এপ্রিল ২০২১

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা

চট্রগ্রামের বাঁশখালীতে আন্দোলনরত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের ওপর চালানো পুলিশের গুলিতে ৫জন নিহতের ঘটনায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিককে আসামি দেখিয়ে  ২টি মামলা হয়েছে। রোববার (১৮ এপ্রিল) বাঁশখালী থানায় মামলা দুটি করা হয়, একটি মামলার বাদি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ; অপরটির বাদি পুলিশ।

এদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সংঘর্ষে নিহতদের পরিবারকে ৩ লাখ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান।

অন্যদিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি ৩ দিনের মধ্যে আর পুলিশের তদন্ত কমিটি ৭ দিনের মধ্যে তদন্দ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন।

পুলিশ বাদির মামলায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা, হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। এক এসআইয়ের করা এ মামলায় অজ্ঞাত আড়াই হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে এসএস পাওয়াপ্ল্যান্টের চীফ কোর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আজ্ঞাত আরও ১ হাজার ৫০ জনকে আসামি দেখিয়ে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের অপর মামলাটি করেন।

বাঁশখালী থানা ওসি শফিউল কবীর বলেন, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শ্রমিক নিহত ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গতকাল থেকে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ রয়েছে। চীনা নাগরিকরা নিরাপদে রয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে বলেও জানান ওসি বাঁশখালী।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক বলেন, ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবির আহম্মেদ, কলকারখানা অধিদফতর চট্টগ্রামের লেবার পরিদর্শক মাসুদ রানা ও বিদ্যুৎ বিভাগ চট্টগ্রামের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী অভিজিৎ কুরি। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেনকে। অন্য দুজন হলেন- পুলিশ সুপার নেছার আহমেদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবির হোসেন।

প্রসঙ্গত, ১৭ এপ্রিল সকালে ১২ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে ডাকে বিদ্যুৎ নির্মাণ কর্তৃপক্ষ। বেলা পৌনে ১২টার দিকে আন্দোলন উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের জোর করে দমাতে যায়। এসময় শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা করলে পুলিশও তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন ও চমেক হাসপাতালে একজন নিহত হয়। আহত হয় অন্তত আরও ১৭ জন। এছাড়া আহত হয় তিন পুলিশ সদস্য।

 

ডিকেটি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর