বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে আরও একধাপ পেছাল বাংলাদেশ। গতবছর অবস্থান ছিল ১৫১তম, এবার অবস্থান ১৫২তম। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) চলতি বছরের ১৮০টি দেশের এ সূচক প্রকাশ করে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ), তাতে বাংলাদেশের অবস্থান প্রকাশ পেয়েছে।
২০১৯ সালের এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫০তম, গতবারের সূচকেও এক ধাপ অবনতি হয়েছিল বাংলাদেশের। গণমাধ্যম কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে, তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবছর এ সূচক প্রকাশ করে আরএসএফ। ২০০২ সাল থেকেই এ সূচক প্রকাশ করা হচ্ছে।
এবারের সুচকে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেও অনেক পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ; ভুটানের অবস্থান ৬৫তম, আফগানিস্তান ১২২তম, নেপাল ১০৬তম এবং শ্রীলঙ্কার অবস্থান ১২৭তম, মিয়ানমার ১৪০তম, ভারত ১৪২তম এবং পাকিস্তান ১৪৫ নম্বরে অবস্থান করছে
সদ্য প্রকাশিত এ সূচকে সবার শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। পরের নয়টি দেশ হচ্ছে- নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, ডেনমার্ক, কোস্টারিকা, নেদারল্যান্ডস, জ্যামাইকা, নিউজিল্যান্ড, পর্তুগাল এবং সুইজারল্যান্ড। সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে- সৌদি আরব, কিউবা, লাওস, সিরিয়া, ইরান, ভিয়েতনাম, জিবুতি, চীন, তুর্কমেনিস্তান, উত্তর কোরিয়া এবং এরিত্রিয়া। এসব দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বললেই চলে।
সূচকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে করোনাভাইরাস সংকট এবং লকডাউন চলাকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশ ও বেসামরিক সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। মহামারি ও সমাজে তার প্রভাব নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য অনেক সাংবাদিক, ব্লগার, কার্টুনিস্ট গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। বিশেষ উদ্দেশ্য অর্জনে সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে সরকারের কাছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামের একটি বিচারিক অস্ত্র আছে। এ আইনে ‘নেতিবাচক প্রচারণা’র দায়ে সর্বোচ্চ সাজা ১৪ বছরের কারাদণ্ড। ফলে আত্মনিয়ন্ত্রণ (সেলফ-সেন্সর) অভূত পর্যায়ে পৌঁছেছে। সম্পাদকেরা সঙ্গত কারণেই জেল বা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঝুঁকি এড়াতে চান।
২০১৯ সালের পর সরকার গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের হাতে সহিংসতার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকেরা, তাদের নির্বিচারে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। যেসব সাংবাদিক দুর্নীতি বা স্থানীয় অপরাধী চক্র নিয়ে অনুসন্ধান করেন, তারা ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন। এ নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
এমকে