মহিদুল খান
দেশে নতুন কৌশলে ঘটছে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা। এ অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে ভুক্তভোগীর পরিচিত লোকজনের মাধ্যমে। অনেকটাই ‘শিক্ষা দেয়ার’ পরিকল্পনা থেকে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)’র চৌকস কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) মোহাম্মদ ইমাম হোসেন।
সাম্প্রতিক এমন একটি ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করেছে সিআইডি। এরপরই প্রকাশ্যে আসে দেশে নতুন ধরনের অপরাধের এ ঘটনা। এ অপরাধ নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় জড়িতদেরকে পাওয়ার রেপিষ্ট হিসেবে অ্যাখায়িত করেছে তারা।
পেশায় দক্ষ গোয়েন্দা ইমাম হোসনের কথায়- এগুলো পশ্চিমা দুনিয়াতে, বিশেষত আমেরিকায় এ ঘটনা ৭০-৮০’র দশকে খুব বেশি ছিল, এখন নেই। কিন্তু বাংলাদেশে এটি নতুন করে শুরু হয়েছে, করোনার কারণে এগুলো অনেক বেশি হয়েছে। এ ঘটনার কারণে আমরা মূলত বেশি উদ্বিগ্ন।
অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক ইমাম হোসেন আরও জানান, এরা হলো পাওয়ার রেপিস্ট। পাওয়ার রেপিস্ট হচ্ছে তারা, যারা কোনো একজন ভিক্টিমকে নিজের পাওয়ার সেলের মধ্যে, যেখানে তার ক্ষমতার বলয় আছে, সেই বলয়ের মধ্যে ভিক্টিমকে সিলেক্ট করে। সিলেক্ট করার পর সুযোগ বুঝে তাদের অপরাধ সম্পাদন করে। পাওয়ার রেপিস্টরা কখনো মার্ডার করে না। রেপ করে তারা তাদের মতো চলে যায়। কারণ এটা তার আওতার মধ্যে। তাকে বাধা দেয়ার কেউ থাকে না। ঝানু গোয়েন্দা ইমাম হোসেন বলেন, ‘এটাকে তারা এক রকমের শিক্ষা দেয়া মনে করে। আমার প্রস্তাবে রাজি হও নি, তাহলে পরিণাম ভোগ করো।’
যে ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনা সম্পর্কে ইমাম হোসেন বলছেন, গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঝড়ের সময়ের ঘটনা। বাইরে থেকে মেয়েলি কণ্ঠে ঘরের দরজা খুলতে বলেন আটকরা। ঘরটিতে থাকা গৃহবধূ দরজা খুলতেই কৌশলে ভেতরে প্রবেশ করে অভিযুক্তরা। এরপর গৃহবধুকে শারিরীক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়, গৃহবধূ রাজি না হলে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। ছিনিয়ে নেয়া হয় মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থ।
গোপালগঞ্জের মকসুদপুরর কদমপুর গ্রামের এ ঘটনা প্রসঙ্গে ইমাম হোসেন আরো জানান, এ ঘটনায় আটক হেমায়েত শেখ, ইয়াছিন মোল্যা ও বসির শেখ ভুক্তভোগী গৃহবধূর পূর্ব পরিচিত। ভুক্তভোগী ভদ্র মহিলা। আগে থেকে চেনার কারণে তার বাসায় যাওয়া-আসা ছিল আটকদের।