ভারতের নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর বিরোধী আন্দোলনের পরপরই বিভিন্ন মামলায় যখন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতাদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে, তখন বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি। রোববার রাতে ফেসবুক লাইভে কমিটি বিলুপ্তের ঘোষণা দেন সংগঠনটির আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী।ঘোষণা দেয়ার আগে রাতে হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতের বৈঠকে কমিটি বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে কমিটি বিলুপ্তের তিন ঘণ্টার মাথায়ই গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি। এ কমিটিতে আহবায়ক করা হয়েছে সদ্য সাবেক আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীকেই। এ আহবায়ক কমিটিই পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে কাজ করবে।
ঘোষণায় মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বড় অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। বাবুনগরী আরও বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে পরামর্শক্রমে কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। ইনশাল্লাহ আগামীতে আহবায়ক কমিটির মাধ্যমে আবার হেফাজতে ইসলামের কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে হাটহাজারীর স্থানীয় হেফাজতনেতা ও সাংবাদিকদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম বলছে, কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার আগে রাত নয়টার পরে হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার আশেপাশে ও প্রবেশপথে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে। মাদ্রাসার বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি প্রসঙ্গে একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, হেফাজতের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতারের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের কমিটি ভেঙে দেয়ায় গ্রেফতার অভিযান আর হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরোধিতা করে গত ২৫-২৭ মার্চ হেফাজতের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সংঘটিত সহিংসতায় অন্তত ১৭ জনের প্রাণহানি ঘটে।পরবর্তীতে ১১ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন মামলায় হেফাজতের নেতাদের গ্রেফতার শুরু করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। রোববার পর্যন্ত হেফাজতের কেন্দ্রীয় ১৬ নেতা ও সারা দেশে অন্তত দুই শতাধিক নেতা, কর্মী ও সমর্থক গ্রেফতার হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির ও নূর হোসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে হেফাজতে ইসলাম। এরপর ১৩ ডিসেম্বর মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী মারা গেলে নায়েবে আমির মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদীকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়।
এমকে