এ.এস লিমন,রাজারহাট(কুড়িগ্রাম)
জনশ্রুতি আছে চাকিপশার বিলের এ ময়দানে প্রায় ২১৪ বছর আগে দেড় হাজার পাঠান একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ ময়দানটির নামকরণ করা হয় পাঠানহাট ঈদগাহ্ মাঠ। চাকিরপশার বিলটি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের সদাগড়পাড়া এলাকায়। বর্তমানে উপজেলার ১৫টি জামে মসজিদের ভিত্তিক জামাতের মুসল্লীরা এ ঈদগাহে নামাজ আদায় করেন।
এ ঈদগাহের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো- ঈদুল ফিতরে এক ইমাম এবং ঈদুল আযহায় আরেক ইমাম জামাত পরিচালনা করে থাকেন। জামাতের আগে ঈদগাহ্ ময়দানে সকাল থেকে সমবেত হতে থাকেন মুসল্লিরা। জামাতের নির্ধারিত সময়ের ঘন্টাখানিক পূর্বে কানায় কানায় ভরে যায় ঈদগাহের বিশাল ময়দান। এছাড়া ঐতিহ্যের টানে অধিক সওয়াবের আশায় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা সমবেত হন। রং বেরংয়ের পোষাক পরে শিশু-কিশোররা আগত মুসল্লিদের সুন্নতি আতর বিতরণে ব্যস্ত থাকে। শিশুদের খেলনা ও রকমারি খাবারের দোকানের পস্রা বসে ঈদগাহের পাশেই। জামাতে অংশ নেয়া মুসল্লিদের ইহকাল-পরকালের মুক্তির বয়ান করেন ইমাম। ময়দানের পাশেই রয়েছে পাঠানহাট কবরস্থান, দাফনের জন্য মাঠ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োজিত রয়েছে দক্ষ কর্মী।
জানা যায়, বাংলা ১২১৩ বঙ্গাব্দ ১৮০৭ খ্রিঃ আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয় এ ঈদগাহে। মুঘল সম্রাট আমলে রাজারহাট উপজেলার তৎকালীন ঘড়িয়ালডাঙ্গা’র জমিদার শরৎ চন্দ্র রায় চৌধুরী ৪ একর আয়তনের গো-চারণ ময়দানটি মুসলমানদের ধর্মীয় কাজে ব্যবহারের জন্য দান করেন। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ধীরে ধীরে পরিসর বেড়ে ময়দানটির পূর্ণতা আসে।
এ বিষয়ে পাঠানহাট ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক লুৎফর রহমান আঁশু বলেন, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন ঈদগাহ মাঠ এটি। বর্তমান সরকারের আমলে সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় ১৫ লাখ টাকার এবং স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আরো ৪ লাখসহ মোট ১৯ লাখ টাকার কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলার বৃহৎ এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজ বর্তমান চলমান রয়েছে।
এমকে