চট্টগ্রাম সংবাদদাতা
জোবাইদা সুলতানা হীরা ওরফে সোনিয়া। ২৫ বছরের এ যুবতী তার প্রেমের ফাঁদে আটকে নাজেহাল করছে অর্ধশত ব্যক্তিকে, টাকা দিয়ে তার ফাঁদ থেকে মুক্তি পেয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অবশেষে এক আইনজীবিকে নাজেহাল করতে গিয়ে তার অবস্থান হয়েছে এখন শ্রীঘরে। সোনিয়া চট্রগ্রামের মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা। তাকে আটকের পরেই অর্ধশত ব্যক্তিকে হয়রানি করার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সোনিয়ার এ কাজে সহযোগিতা করেন ৩/৪জন যুবক। প্রথমে প্রেমের অভিনয়, তারপর ফাঁদ পেতে শিকারকে কৌশলে নিজের ঘরে নিয়ে আসেন সোনিয়া। এরপর ঘরের মধ্যেই অশ্লীল ছবি তুলে ৩/৪ যুবকের সহযোগিতায় আদায় করেন টাকা। ছিনিয়ে নেয় মোবাইল সেট ও স্বর্ণের আংটিসহ অন্যান্য দামি জিনিসপত্র। টাকা না পেলে চলে নির্যাতন, তাদের অত্যাচার নির্যাতনে প্রাণও গেছে অনেকের।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই আইনজীবীকে তাদের ফাঁদ থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে সোনিয়া ও তার এক সহযোগিকে আটক করে পুলিশ। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় আরো ৩ জন। আটক সহযোগির নাম ইমরান (২৭)। সোনিয়ার বিরুদ্ধে একটি হত্যাসহ তিনটি মামলা এবং ইমরানেরও বিরুদ্ধেও তিন মামলা রয়েছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, হাবিব নামে এক আইনজীবীকে মামলার বিষয়ে কথা আছে জানিয়ে নগরের আগ্রাবাদ চৌমুহনী এলাকায় দেখা করে সোনিয়া। একপর্যায়ে সেখান থেকে মৌলভীপাড়ায় সোনিয়ার বাসায় যেতে বললে হাবিবও সেখানে যান। বাসায় যেতেই আরও তিন যুবক তাকে আটককে প্রাণনাশের হুমকিসহ দাবি করেন ২০ হাজার টাকা। এসময় আইনজীবী কৌশলে থানায় ফোন করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ও এক সহযোগীসহ সোনিয়াকে আটক করে। এসময় বাকি দুইজন পালিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোনিয়া গত ১০ বছরে কমপক্ষে এ রকম ৫০টি জিম্মির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানায়।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘সোনিয়া সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের প্রধান। তার গ্রুপে আরও চারজন ছেলে আছে। সোনিয়া প্রেমের অভিনয় করে ছেলেদের নিজ ঘরে নিয়ে আসে। এরপর চক্রের বাকি সদস্যরা অশ্লীল ছবি তুলে জিম্মি করে টাকা আদায় করে। যারা ছবি দেখেও টাকা দেয় না, তাদের মারধর করে; এমনকি প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়। তাদের হাতে এভাবে জিম্মি অবস্থায় ২০১৩ সালে একজন মারা যায়। গতকাল এক আইনজীবীর কৌশলী ফোনে তাদের আটক করে পুলিশ।
দিলীপ কুমার তালুকদার/এমকে