সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
কিডনি দুটো বিকল হওয়ার আগে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন জসীম উদ্দীন, কাজ করতেন প্রাণ কোম্পানীর ড্রাইভার পদে। কিন্তু রোগ জটিল আকার ধারণের পরে গত প্রায় এক বছর ধরে শয্যাশায়ী তিনি। সামান্য ভিটেমাটি ছাড়া যেটুকু জমি ও গবাদিপশু ছিলো- সব বিক্রি করে এতোদিন চিকিৎসার খরচ চালালেও বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না, প্রতিনিয়তই মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তির এমন দশায় ভেঙ্গে পড়েছে গোটা পরিবার, দারিদ্রতা আঘাত হেনেছে তার পরিবারে। সংসারের এ দুর্দশা দেখে চিকিৎসা না হলে আরোগ্য লাভ করবেন না জেনেও পরিবারের জন্য বাঁচতে চান জসীম উদ্দীন।
বয়স চল্লিশের জসীম উদ্দীন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের গিরিশনগর গ্রামের হাছান আলীর ছেলে। জসীম উদ্দীনের ৪ সন্তান- বড় মেয়ে সমুজ আলী স্কুল এন্ড কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করছে, দ্বিতীয় ছেলে টেংরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস এইটে পড়ে; আর ছোট্ট দুই ছেলে পড়াশোনা করছে প্রাইমারি স্কুলে। পরিবারে কর্মক্ষম দ্বিতীয় কেউ না থাকায় অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই তার পরিবারের আয় উপার্জন বন্ধ রয়েছে। ঋন করে একদিকে চিকিৎসা খরচ, অন্যদিকে সাংসারিক খরচ চালাতে গিয়ে এখন দিশেহারা জসীম উদ্দীনের পরিবার।
সরেজমিনে গিরিশনগর গ্রামে জসীম উদ্দীনের বাড়িতে গেলে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তার স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনরা। তার স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, 'সপ্তাহে দুইদিন নিতে হয় রক্ত। সেখানেও প্রতি সপ্তাহে খরচ হয় ৫৫০০ টাকা। এছাড়া একদিন পর পর ডায়ালাইসিস করাতে হয়। সেখানেও সপ্তাহে খরচ হয় ১১ হাজার টাকা। এতোদিন চিকিৎসা করানো হলেও খরচ ব্যয়বহুল হওয়ায় টাকার অভাবে এখন আর উন্নত চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। এখন ঢাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তার চিকিৎসা চলছে। কি যে করবো ভেবে পাচ্ছি না।' জসীম উদ্দীনের বড়ভাই মোহাম্মদ রাজু উদ্দিন বলেন, 'আমরা ড্রাইভারি করতাম। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল। এক বছর আগে হঠাৎ করে জসীম উদ্দীনের অসুস্থতা দেখা দেয়। হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ধরা পড়ে- তার দুটি কিডনি বিকল। সে অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই আমরা আমাদের সাধ্যমতো তার সংসারের খরচ ও চিকিৎসা খরচ চালিয়ে গেছি। করোনার কারণে এখন আমার ড্রাইভিংয়ের কাজও বন্ধ। নিজেই চলতে পারছি না এখন। চোখের সামনে ভাইটা যন্ত্রণা ভোগ করছে, তার স্ত্রী সন্তানরাও কষ্টে আছে। কিছুই করতে পারছি না। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর চাওয়ার মতো জায়গা নেই। সমাজের হৃদয়বানরা এগিয়ে এলেই আমার ভাই আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পাবে।’
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজন প্রায় ২৫ লাখ টাকা। জসীমের পরিবারের পক্ষে এতো টাকা যোগাড় করা কখনোই সম্ভব না।তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছে তার পরিবার। জসীম উদ্দীনের পার্সোনাল বিকাশ নাম্বার ০১৬৪৪৩১৪৯৯৮ এবং অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট নং-০২০০০১৬৮৩০৫৮৪।
আশিস রহমান/এমকে