করোনার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে সরকার তার পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে সব ধরণের চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও দৈনিক-ই লম্বার হচ্ছে শনাক্তের তালিকা, বড় হচ্ছে লাশের মিছিল। এর মধ্যে ভারতকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করা করোনার ‘ভারতীয়’ ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে দেশে। জনসচেতনতার অভাব-ই এ মুহূর্তে দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণের বড় বাধা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, দেশের প্রত্যেকে নিজের জায়গা থেকে সচেতন না হলে ভারতের মতোই দেশকে মৃত্যুপরীর কিনারে নিয়ে যাবে করোনা। করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়ায় খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরও আরো বেশি সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে সবাইকে।
শনিবার সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানিয়েছে, ভারত থেকে আসা দুই ব্যক্তির শরীরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। আরো চারজনের শরীরে ভ্যারিয়েন্টের খুব কাছাকাছি এ ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। তারা সবাই চিকিৎসাধীন, ভালো আছেন।
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ভারতীয় এ ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি। তাই মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা ও হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে অবশ্যই এটা বাড়তে পারে। যে কোনো ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও বিকল্প নেই। মানুষকে অনেক বেশি সর্তক থাকতে হবে- এটা খুব খুব জরুরি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ অক্টোবর ভারতে এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। সম্প্রতি ভয়াবহ রূপে হানা দিয়েছে, প্রায় প্রতিদিনই ভাঙছে মৃত্যু ও শনাক্তের রেকর্ড। শনিবারও করোনা মহামারিতে একদিনে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে দেশটিতে, সরকারি হিসাবে মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ১৮৭ জন করোনা রোগীর।নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে চার লাখ এক হাজারের বেশি মানুষ। বর্তমানে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৬ জন। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৩৮ হাজারের বেশি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ঈদ ঘিরে মানুষের বেপরোয়া চলাচল রোধ করা জরুরি।জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে অহেতুক বের হওয়া যে কোনোভাবেই হোক সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে। করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানাতে বাধ্য করাতে হবে সবাইকে। স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে আরো বেশি তৎপর হতে হবে। জীবিকার স্বার্থের দোহাই দিয়ে যেন করোনার স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত না হয়, সে দিকটাও দেখতে হবে।
এমকে