নির্ধারিত সময়ে কুমারখালী-যদুবয়রা সেতুর কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয়

১১ মে ২০২১

মাহমুদ শরীফ, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
করোনার কারনে কুষ্টিয়ার কুমারখালী-যদুবয়রা সেতুর নির্মাণ কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে এক ধরনের সংশয় দেখা দিয়েছে এলাকাবাসীর মাঝে। যদিও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আশা নির্দিষ্ট সময়েই নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারবে তারা। তারা বলছে, ইতোমধ্যেই মূল সেতুর প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।  ৮৯ কোটি ৯১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫৯১ টাকা টাকা বরাদ্দ দেয়া এ সেতুর নির্মাণ কাজ যৌথভাবে করছে দেশের অন্যতম বৃহৎ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নেশনটেক কমিউনিকেশন লিমিটেড ও রানা বিল্ডার্স। শহর খেয়া ঘাটে নির্মাণাধীন এ সেতু কুমারখালী উপজেলার দক্ষিণের পাঁচ ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। আগামী ২৫ অক্টোবর সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

সেতুটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্মাণ করছে। ১১২টি পাইলের উপর ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্য পিসি গার্ডারে সেতুর ওয়ার্কওয়েসহ ৯ দশমিক ৮০ মিটার চওড়া করা হবে। এ ছাড়াও দুই পাড়ে মোট ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্য এপ্রোচ সড়ক ও নদী শাসনে প্রটেকটিভ ওয়ার্ক নির্মাণ করা হবে সাড়ে তিন শত মিটার।

২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই সবগুলো স্প্যানের কাজ শেষ করেছে। ৫২টি পিসি গার্ডারের সেতুতে স্প্যান রয়েছে ১৩টি। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য হবে ৫০ মিটার। চওড়া হবে ৯.৮০ মিটার। সেতুর দক্ষিণের যদুবয়রা পাড়ের ৯ থেকে ১৩ নং স্প্যানের ১৬টি গার্ডারের ১৪টির ঢালাই ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। ১০ই মে ৯ ও ১০ নং স্প্যানের ১৪নং গার্ডারের ঢালাই সমাপ্ত হয়েছে। সেতুতে মোট গার্ডারের সংখ্যা রয়েছে ৫২টি।

বর্তমানে সেতুর নির্মাণ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী আর শ্রমিকদের ঈদের ছুটি চলছে। ছুটি শেষ হলে কুমারখালী পাড়ে গার্ডারের কাজ শুরু হবে। উত্তর পাড়ে গার্ডারের পাইলিং শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমের কারনে নদীর তলদেশে সামান্য পানি থাকলেও অধিকাংশ স্প্যান বালুর চরে আটকে আছে। বর্ষায় নদীতে পানি টইটম্বুর হয়ে পড়বে। তখন সেতুর উপরিভাগের কাজ পুরোদমে চলবে বলে ম্যাটিরাল প্রকৌশলী শরীফ হোসেন জানিয়েছেন।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত প্রোজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী আশিক আহমেদ জানিয়েছেন, ঈদের পরে মূল গার্ডারের উপরে ডেক্স স্লাব, রেলিং ও প্রচ গার্ডারের কাজ করা হবে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।


গত বছর করোনার কারনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অর্থ সংকটে সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। সময় মতো বিল না পাওয়ায় অর্থ সংকটে পড়েছিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এতে কাজ পিছিয়ে যায়, সেই পিছিয়ে পড়া সংকট পূরণ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। ফলে নির্দিষ্ট মেয়াদে সেতু নির্মাণ শেষ হচ্ছে না বলে আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে সেতুর দুই পাশে নদী শাসন ও এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করার ক্ষেত্রে এখনও ডিজাইন এবং অর্থ বরাদ্ধ হয়নি। সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুধু মাপ-জোকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। কুমারখালী পাড়ে ৩শত ও যদুবয়রা পাড়ে ৫শত মিটার দৈর্ঘ্য এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ হবে।


এ টোল ফ্রি সেতু নির্মাণ হলে উপজেলার সাথে ঝিনাইদহ ও মাগুরার দূরত্ব এবং গড়াই নদী দ্বারা বিভক্ত দক্ষিণের পাঁচটি ইউনিয়নের মানুষের দীর্ঘ দিনের দূর্ভোগ কমবে। শিল্প শহর কুমারখালীর অর্থনৈতিক গতি পাবে।

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর