চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলায় সাবেক এসপি বাবুল গ্রেফতার !

১১ মে ২০২১

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার (১১ মে) সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে সোমবার এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুল আক্তারকে নিজেদের কার্যালয়ে ডেকে নেয় পিবিআই। গ্রেফতার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে। ২০১৬ সালে মিতুকে হত্যা করা হয়।

গ্রেফতারের আগে দুপুরে চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (পরিদর্শক) সন্তোষ কুমার চাকমাসহ পিবিআইয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে এ বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করছে পিবিআই। পিবিআইয়ের একটি সূত্র বলছে, মিতু হত্যায় তার স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পেয়েছে তারা। এজন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, উনি মামলার বাদি। আমরা যেহেতু মামলা তদন্ত করছি, উনি অগ্রগতি জানতে আমাদের কাছে এসেছিলেন। পিবিআই চট্রগ্রামের প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেছেন, 'তিনি (বাবুল) আগেও এসেছিলেন। আজকেও পিবিআইতে গেছেন। মামলার বাদী হিসেবে উনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হাইকোর্টের রুলিং আছে, এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাবে না।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ের কাছে ওআর নিজাম রোডে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ছুরিকাঘাত ও গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার অজ্ঞাতপরিচয় তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মিতু হত্যাকাণ্ডের পর প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল- জঙ্গিরা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কারণ তার স্বামী বাবুল আক্তার জঙ্গিবিরোধী অপারেশনে পুলিশের প্রথম সারির কর্মকর্তাদের একজন ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বাবুল আক্তার ও মিতুর পরকীয়ার বিষয়টিও আলোচিত হয় গণমাধ্যমে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্যও নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পুলিশ এসবের কোন যোগসুত্র খুঁজে পায়নি। হত্যাকাণ্ডের বছরখানেক পর থেকেই মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন দাবি করে আসছিলেন- বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে তার মেয়ে মিতুকে খুন করা হয়েছে।

মিতু হত্যাকাণ্ডের পর একটি মাজারের খাদেম আবু নছর ওরফে গুন্নু ও শাহজামান ওরফে রবিন নামের আরও এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে তারা জামিনে বেরিয়ে আসেন। হত্যকাণ্ডের ২০ দিন পর তদন্ত ভিন্নখাতে মোড় নেয়। ২০১৬ সালের ২৪ জুন মধ্যরাতে ঢাকার বনশ্রী এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। পরে তাকে বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়। এরপর নানা গুঞ্জন ডালপালা ছড়ায়। এসময় পুলিশ জানায়- বাহিনী থেকে পদত্যাগ করেছেন বাবুল আক্তার।

তবে বাবুল আক্তারের দাবি ছিল- তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেননি। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তিনি। নানা নাটকীয়তা শেষে ৬ সেপ্টেম্বর বাবুলকে চাকরি থেকে অব‌্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

দিলীপ কুমার তালুকদার/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর