পঞ্চগড় প্রতিনিধি
গত তিন মাসে দেশে পাঁচবার দেখা মিলেছে বিরল প্রজাতির সাপ রেড কোরাল কুকরি। আর এ পাঁচবারেই দেখা মিলেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। সবশেষ দেখা মিলেছে রোববার রাতে জেলার বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ মোটাপাড়া এলাকার একটি রাস্তায়। পঞ্চমবারের মতো দেখতে পাওয়া এ সাপটি সেখান থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন বণ্য প্রাণী সংরক্ষক ও উদ্ধারকারী সহিদুল ইসলাম। এর আগে গোটা পৃথিবীতে মাত্র ২০-২২বার এ সাপের দেখা মিলেছে বলে জানা গেছে।
সহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা সাপটিকে দেখতে পেয়ে না মেরে আটকে রেখে আমাকে খবর দেন। ইতোমধ্যে এ প্রজাতির সাপটি বাংলাদেশে রেকর্ডসহ আন্তর্জাতিক গবেষণা পত্রে প্রকাশ পেয়েছে। মানুষ এখন মোটামুটিভাবে সচেতন হয়েছে, সাপ দেখলে না মেরে উদ্ধারকারীকে ফোন দিচ্ছে।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি একই এলাকা থেকে আহত অবস্থায় প্রথমবারের মতো উদ্ধার হয় এ প্রজাতির একটি সাপ। এরপরে ২৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার চাকলাহাট এলাকা থেকে দ্বিতীয়বারের মতো মৃত অবস্থায়, ২০ এপ্রিল টুনিরহাট এলাকা থেকে তৃতীয়বারের মতো জীবিত এবং ১০ মে একই এলাকা থেকে চতুর্থবারের মতো মৃত অবস্থায় এ প্রজাতির সাপ উদ্ধার হয়।
জানা গেছে, উজ্জ্বল কমলা ও প্রবাল লাল বর্ণের এ প্রজাতির সাপের বৈজ্ঞানিক নাম ওলিগোডন খেরেনসিস (Oligodon Kheriennsis)। ১৯৩৬ সালে উত্তর প্রদেশের খেরি বিভাগের উত্তরাঞ্চল থেকে এ সাপ প্রথম দেখতে পাওয়া যায়। স্বভাবে এ প্রজাতির সাপ মৃদু বিষধারী ও অত্যন্ত নিরীহ, সাপটি নিশাচর এবং বেশির ভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। দেখতে অত্যন্ত মোহনীয়। আবাস হিসেবে হিমালয়ের পাদদেশের দক্ষিণে ৫৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার এলাকায় এটি দেখা যায়। সম্ভবত মাটির নিচে কেঁচো ও লার্ভা পিপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবন ধারণ করে। নরম মাটি পেলে মাটি খুঁড়ে ভেতরে চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। মাটির ভেতরে থাকার জন্য রোসট্রাল স্কেল ব্যবহার করে সাপটি। রোসট্রাল স্কেল হলো সাপের মুখের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত অঙ্গবিশেষ যার সাহায্যে মাটি খনন করে। এ সাপটি পূর্ণ বিষধর হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
মো. আবু নাঈম/ এমকে