সামষ্টিক অর্থনীতিতে ক্ষতির আশঙ্কা

১৯ মে ২০২১

বাস্তাবিয়ত না হলে সরকারের একশ’ বছরের ডেল্টা প্ল্যানে  দেশের সামষ্টিক এবং খাতভিত্তিক অর্থনীতি যথেষ্ট ক্ষতির মুখে পড়বে।বাড়বে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি, বেড়ে যেতে পারে জীবনযাত্রার ব্যয়ও। জলবায়ু পরিবর্তনের চরম পর্যায়ে এ সব ক্ষতি ও ব্যয় সমানুপাতিক হারে বাড়বে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দরকার হবে- পানি, পরিবেশ, ভূমি, কৃষি খাতের কৌশল প্রণয়ন এবং যথাযথ বিনিয়োগ, নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের। নেদারল্যান্ডসের আদলে  করা শতবর্ষী এ প্ল্যানকে দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসেবেই দেখছে সরকার।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বিদ্যমান অবকাঠামোর উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এ প্ল্যানটি  বাস্তবায়নে প্রতিবছর  প্রয়োজন হবে মোট দেশজ আয়ের প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ পরিমাণ অর্থের। বর্তমান বিনিয়োগ এবং বিদ্যমান দেশজ আয় ব্যবহার করে পরিকল্পনা সংক্রান্ত প্রকল্পের জন্য প্রাক ব্যায়ের মাত্রা ২০৩০ সাল নাগাদ ২৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, এ প্ল্যানটির  ধারণা অনুযায়ী মোট জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ অর্থায়ন বেসরকারি খাত থেকে এবং ২ শতাংশ  সরকারি খাত থেকে নির্বাহ করতে হবে। সরকারি খাত থেকে পাওয়া ২ শতাংশ থেকে দশমিক ৫ শতাংশ রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয়ের পর অবশিষ্ট দেড় শতাংশ এ প্ল্যানটিতে বিনিয়োগ পরিকল্পনার আওতায় ব্যয় হবে।

শতবর্ষী এ প্ল্যানটির  বেশিরভাগ সরকারি অর্থায়ন প্রয়োজন হবে বন্যা থেকে রক্ষা, নদী ভাঙন, নিয়ন্ত্রণ, নদীশাসন, এবং নাব্যতা রক্ষাসহ সামগ্রিক নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার মাধ্যমে নদী ব্যবস্থাপনার মতো কাজের জন্য।  এছাড়া বড় নগরগুলোতে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিস্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থা খাতে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বিনিয়োগ থেকে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ অর্থের প্রয়োজন হবে। ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকার পানি ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্যও বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে।

ব-দ্বীপ বিনিয়োগ পরিকল্পনায় ২০৩০ সাল নাগাদ প্রথম পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ৮০টি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে ভৌত অবকাঠামোগত প্রকল্প ৬৫টি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও দক্ষতা উন্নয়ন এবং গবেষণা বিষয়ক প্রকল্প ১৫টি । এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।  ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় ছয়টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- বন্যা, নদী ভাঙন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পনি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বন্য নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বরে এ প্ল্যানটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত ডেলটা গভর্ন্যান্স কাউন্সিল।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর