নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন (এনআইডি) কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরে প্রস্তাব দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এদিকে এ প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ বিষয়ে বুধবার (১৯ মে) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, এনআইডি কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশের উদাহরণের আলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ঐ দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বিবেচিত। এজন্য এ সংক্রান্ত দায়িত্ব সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করতে ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং ডিফরেন্ট মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশনস’ এ সুরক্ষা বিভাগের দায়িত্বগুলোর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০ এ ‘নির্বাচন কমিশন’ এর পরিবর্তে ‘সরকার’ শব্দ অন্তর্ভুক্তকরণসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সুরক্ষা সেবা বিভাগ কর্তৃক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
বিদ্যমান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার ক্ষমতা ও এখতিয়ার ইসিকে দেয়া হয়েছে। এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা তথ্য-উপাত্ত সংশোধন, সংযোজন ও বিয়োজনের কাজও ইসির অধীন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করে আসছেন। গত বছর রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রমের দায়িত্ব চেয়ে একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ প্রস্তাব সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলেছে, বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করছে তারা । ইসিকে দেয়া স্মারক লিপিতে বলা হয়, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ইসির অধীনে জাতীয় পরিচয়পত্রের চলমান কার্যক্রম আগের মতোই অব্যাহত রেখে কীভাবে দ্রুত সেবা নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশর সভাপতি নুরুজ্জামান তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, সিইসিকে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়টি তার জানা নেই বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন। কমিশনের সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলেও তিনি (সিইসি)নিশ্চিত করেছেন। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
অন্যদিকে কমিশন বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।বৈঠক শেষে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, কমিশন বসে বিষয়টি দেখেছেন এবং গভীরভাবে পর্যালোচনা করবেন বলে আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এমকে