রাজধানীর পল্লবীতে প্রকাশ্যে শিশু সন্তানের সামনে তার বাবাকে হত্যার ঘটনায় সাবেক এমপি এম এ আউয়ালকে চারদিনের রিমাণ্ডে নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। এদিকে এ মামলার অন্যতম আসামি মানিক র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার ভোরে রাজধানীর মিরপুর এলাকার রূপনগরের ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
এম এ আউয়াল লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান ও তরিকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব। হাভেলি প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও তিনি । তিনি চাঞ্চল্যকর শাহিন উদ্দিন হত্যা মামলার প্রধান আসামি। গত ১৬ মে বিকালে এ শাহিন উদ্দিনকেই তার সন্তানের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সংঘটিত এ হত্যাকাণ্ডের মাষ্টারমাইন্ড এম এ আউয়াল, আর নিহত মানিক শাহিনের কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল বলে জানিয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বৃহস্পতিবার ভৈরবের একটি মাজার থেকে গ্রেফতারের পর শুক্রবার এম এ আউয়ালকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় মামলার তদন্তের স্বার্থে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার জন্য আবেদন করেন ডিবির পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন। এম এ আউয়ালকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এদিকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ সম্পর্কে র্যাব জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় অবস্থানরত একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে তাদের নিয়মিত টহল টিমের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।এ সময় সন্ত্রাসীরা পিছু হটলেও ঘটনাস্থলে একজনকে গুরুতর অবস্থায় পাওয়া যায়। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়- নাম মানিক, তিনি শাহীন হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাব জানায়, ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের অবস্থান করার খবর পেয়েই সেখানে যায় নিয়মিত টহল টিম। এ সময় টহল টিমকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে আত্মরক্ষার্থে র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়।
যে ছেলের সামনে তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে তার নাম মাশরাফি।মাশরাফি জানায়, ঘটনার আগে সে তার বাবার সঙ্গে মোটরসাইকেলে ঘুরছিল। এ সময় সুমন নামের একজন তার বাবাকে ফোন দেন, ৩১ নম্বর রোডে দেখা করতে কথা বলেন। সেখানে পৌঁছালে মাশরাফিকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। এরপর তার বাবার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান ওই ব্যক্তি। এক পর্যায়ে তার বাবাকে লাথি মেরে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়া হয়। এরপর ৬-৭ জন মিলে তার বাবাকে এলোপাথাড়িভাবে কোপাতে থাকেন। বাঁচার জন্য তার বাবা পাশের একটি বাড়ির গ্যারেজে আশ্রয় নিলেও সেখানে ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় ২০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলাটি করেন শাহিন উদ্দিনের মা আকলিমা বেগম ।
এমকে